বাংলাদেশ ক্রিকেটে গত এক দশকের সবচেয়ে আলোচিত নাটকগুলোর একটি হলো তামিম ইকবালের হঠাৎ আন্তর্জাতিক অবসর। ২০২৩ সালের সেই দিনটা ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে ছিল বিস্ময় আর হতাশায় মোড়া। সবাই ভেবেছিল, আবেগের বসে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তামিম। কিন্তু এবার সমকালের সঙ্গে এক বিস্ফোরক সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন, সবকিছুর পেছনে ছিল দীর্ঘদিনের মানসিক চাপ, দল থেকে একঘরে করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র এবং ‘বিশেষ কয়েকজনের’ অনভিপ্রেত আচরণ।
তামিম বলেন,
❝ যখন ২০২৩ সালে খবরটা দিলাম, অনেক মিডিয়া মনে করেছে আবেগে ছেড়েছি। কিন্তু আমি অনেক দিন ধরে ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়ছিলাম। মানসিকভাবে চরম চাপে ছিলাম। ❞
এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি ইঙ্গিত দেন, এই অবসর মোটেই তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। বরং ছয় থেকে আট মাস ধরে তার বিরুদ্ধে তৈরি হয়েছিল এক ধরনের ‘চুপিসারে চলা পরিকল্পিত দূরত্ব’—যার পেছনে জড়িত ছিলেন দলেরই ২-৩ জন ব্যক্তি।
তামিম আরও বলেন,
❝ আমি সবসময় সবাইকে নিয়ে আড্ডা দিতে পছন্দ করতাম। গল্প করতাম। কিন্তু হঠাৎ একটা সময় আমাকে একা করে দেওয়া হলো। এটা আমি মেনে নিতে পারিনি। সেই একাকীত্বই আমাকে ধ্বংস করেছে। ❞
সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট না করলেও ‘২-৩ জনের জন্য সরে দাঁড়ানো’ বলেই ক্রিকেট মহলে নতুন করে শুরু হয়েছে জল্পনা—কে বা কারা এই ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন? বোর্ডের কেউ? নাকি দলের ভিতরের কিছু সিনিয়র?
তামিম জানান, অবসর ঘোষণার আগেই তিনি পরিবার ও কাছের কিছু মানুষের সঙ্গে পরামর্শ করেছিলেন।
❝ হ্যাঁ, যেদিন ঘোষণা দিয়েছি, সেদিন আবেগাপ্লুত ছিলাম। কিন্তু তার অনেক আগেই সিদ্ধান্তটা তৈরি হয়েছিল। সেই প্রেক্ষাপট কেউ জানে না। ❞
এখন প্রশ্ন উঠছে—
তামিমের এই বক্তব্য কি বোর্ড বা সংশ্লিষ্টদের মুখোশ খুলে দেবে?
তিনি কি ভবিষ্যতে সবকিছু বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করবেন?
আর কাদের নিয়ে ইঙ্গিত করেছেন তামিম?
ক্রিকেটবিশ্ব এখন অপেক্ষা করছে সেই পর্দা সরানোর, যেখানে হয়তো ধরা পড়বে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অজানা ও অন্ধকার কিছু অধ্যায়।
Leave a Reply