ভারতের অসহযোগিতায় ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ, কী বলছে পূর্বাভাস কেন্দ্র!

যৌথ নদীগুলোতে আধা স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার পাশাপাশি নেই পর্যাপ্ত মনিটরিং সেন্টার। অন্যদিকে, ভারতের সহযোগিতার অভাবে নদীর পানি ব্যবস্থাপনায় পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। বারবার বন্যা ও খরায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকার ফসলসহ অন্যান্য সম্পদ। সঠিক বার্তা পেতে উজানে আরও ১৪টি পয়েন্টে মনিটরিং সেন্টার প্রয়োজন বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র। কাঠামোর আধুনিকায়নসহ দিল্লিকে আইন মানার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
ভা
সম্প্রতি বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢলে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ ভাটির দেশ হওয়ায় পরিস্থিতি কখনো এমন, মোকাবিলা তো দূরের কথা- প্রতি ঘণ্টায় দৃশ্যপট পাল্টে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা।

বন্যা সতর্কতা ও পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, আবহাওয়ার পূর্বাভাস মডেলের মাধ্যমে পানির স্তর পরিমাপ করে এসএমএস পদ্ধতিতে খবর মেলে দিনে মাত্র দুই বার। উজানের পূর্ণ তথ্যের জন্য প্রয়োজন ২৮টি পয়েন্ট, বর্তমানে আছে ১৪টি। যৌথ নদীর পানির তথ্য নির্ভর ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের ওয়েবসাইটে। নেই ওশান বা সমুদ্রভিত্তিক নেটওয়ার্কিং মডেল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন এই পূর্বাভাস কেন্দ্রের কাছে মাইক-১১ মডেল অত্যাধুনিক না হওয়ায় বিপাকে পূর্বাভাস কার্যক্রম।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের এফএফডব্লিওসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান সময় সংবাদ বলেন,
বর্তমানের পূর্বাভাস ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে চাইলে আমাদের জন্য উজানের আরও কিছু তথ্য প্রয়োজন। এটি ইতোমধ্যেই প্রস্তাবনা আকারে পেশ করা হয়েছে। প্রাথমিক প্রস্তাবনা ছিল, অন্তত ২৮টি পয়েন্টে তথ্য-উপাত্ত প্রয়োজন উজানের।

আন্তর্জাতিক নদী আইন মেনে উজান ও ভাটির উভয় দেশের স্বার্থ রক্ষার পরামর্শ দিয়ে মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুর রব বলেন,
বেসিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম উন্নত করার পাশাপাশি হাইড্রোলজিক্যাল ও ক্লাইমেটলজিক্যাল তথ্য বিনিময় উন্নত করতে হবে। এছাড়া পানির সঠিক হিস্যা পেতে যৌথ নদী কমিশনে নিয়োগ দিতে হবে কারিগরি ও আইনে দক্ষদের।

এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘দুই দেশের স্বার্থ, প্রয়োজন ও বাস্তবতার নিরিখেই যৌথ নদী কমিশন। নিয়মিত বৈঠকে বসে ডাটা বিনিময়সহ নানা সমস্যা তুলে ধরা হত এবং উভয় দেশ আইন মেনে চললে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেত।’

যৌথ নদী কমিশনের মে মাসের তথ্য অনুযায়ী, ফারাক্কায় গঙ্গার ৫৭ হাজার ৩৩০ কিউসেক পানি সম্পূর্ণ বাংলাদেশের অধিকার থাকলেও তার অর্ধেক নিয়ে নিচ্ছে ভারত। এমন অবস্থায় উজানের দেশ হিসেবে প্রতারণা না করে ভাটির দেশকে অধিকার আদায়ে সরকার, জনগণ ও ইনটেলিজেন্সের সমন্বয়ে কাজ করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *