লজ্জাজনক হারের পর বাংলাদেশ দল নিয়ে যা বললেন : শান্ত

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্স পরিসংখ্যানের দিক থেকে কিছুটা সফল হলেও মাঠের পারফরম্যান্স এবং মানসিকতা নিয়ে বড় সমালোচনা তৈরি হয়েছে। ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার এইটে উঠে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করলেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ব্যাটিং এবং পরিকল্পনায় ব্যর্থতা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারানোর পর দলের নেতিবাচক মানসিকতা ও ‘অদ্ভুত’ সিদ্ধান্ত সমর্থকদের হতাশ করেছে। এমন পারফরম্যান্সে প্রমাণিত হয়েছে, বড় মঞ্চে সুযোগ পেয়ে বাংলাদেশ দল চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে, যা দেশের ক্রিকেটকে পিছিয়ে দিচ্ছে।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের মানসিকতা ও রান তোলার ক্ষমতা নিয়ে আরও বড় প্রশ্ন উঠে আসে। সাম্প্রতিক ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যেখানে ২০০ রান করা সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেখানে বাংলাদেশ ১৭০ রানও কালেভদ্রে করে। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেছেন, ১৮০ বা এর বেশি রান করার কৌশল নিয়ে দলটির যথেষ্ট ধারণা নেই। এই ব্যাটিং সমস্যার ফলে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পিছিয়ে পড়েছে, যেখানে চার-ছক্কার খেলা আধুনিক ক্রিকেটের নতুন মানদণ্ড হয়ে উঠেছে।

ভারতের বিপক্ষে সিরিজটি বাংলাদেশের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হতে পারতো, বিশেষ করে ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসাবে। কিন্তু এই সিরিজেও ইতিবাচক ক্রিকেটের আশা পূরণ হয়নি।

টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স খারাপের দিকে যাচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে অবশ্য নিজেদের এত খারাপ দল বলতে রাজী নন শান্ত। বাংলাদেশের অধিনায়ক বলেন, ‘খারাপ হয়েছে যে সেটাও বলবো না। আমার মনে হয় যে, এর থেকে আমরা ভালো দল। শেষ অনেকদিন ধরে এই সংস্করণে আমরা ভালো পারফরম্যান্স করছি না। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি না আমরা এত খারাপ দল।’

সিরিজ শুরুর দিন দুয়েক আগে নাজমুল শান্ত জানিয়েছিলেন, ভারত সিরিজ থেকে ক্রিকেটারদের মাঝে ভিন্ন এক অ্যাপ্রোচের দেখা মিলবে। সেটার ছিঁটেফোঁটা অবশ্য দেখা গেছে ইনিংসের প্রথম ওভার থেকেই। আর্শদীপ সিংকে প্রথম স্লিপ এবং থার্ডম্যানের মাঝ দিয়ে চার মারার পরের বলেই বাউন্ডারির জন্য উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন লিটন। তবে টপ এজ হয়ে তাকে উইকেট দিতে হয়েছে। চাপের মুখে ছক্কার আশায় খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন তাওহীদ হৃদয়।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তো নিজের খেলা দ্বিতীয় বলেই কভারের উপর দিয়ে খেলতে গিয়ে ফিরেছেন এক রানে। জাকের আলী অনিক কিংবা রিশাদ হোসেনের ব্যাটিংয়েও ছিল সেটার ছাপ। তবে নতুন অ্যাপ্রোচ আর ইন্টেন্টে খেলতে গিয়ে বাংলাদেশ থেমেছে ১২৭ রানে। সেটাও শান্ত ও মেহেদী হাসান মিরাজের ১১০ ছুঁইছুঁই স্ট্রাইক রেটে। শান্ত জানিয়েছেন, তিনি যে অ্যাপ্রোচের কথা বলেছিলেন সেটার জন্য শুরুটা গুরুত্বপূর্ণ।

অথচ পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ ২ উইকেট হারিয়ে তুলতে পেরেছে মাত্র ৩৯ রান। নিজেদের অ্যাপ্রোচ নিয়ে শান্ত বলেন, ‘আমি যে অ্যাপ্রোচের কথা বলেছিলাম, সে জন্য ব্যাটিংয়ে ভালো শুরুটা গুরুত্বপূর্ণ। শুরুটা ভালো হবে বাকিদের কাজটা সহজ হয়ে যায়। যারা ওখানে ভালো খেলছে, তাদের দায়িত্ব নিতে হবে।’

অ্যাপ্রোচ বদলাতে না চেয়ে বাংলাদেশের অধিনায়ক বলেন, ‘কোনো নির্দিষ্ট খেলোয়াড়কে নিয়ে বলতে চাই না। আমরা সবাই মিলেই ব্যর্থ হয়েছি। আক্রমণাত্মক মানসিকতা থাকবেই, তবে কখন কোন শট খেলব, এটা বুঝতে হবে। এখনই এই অ্যাপ্রোচ বদলাতে চাই না। আমাদের এভাবে খেলে যেতে হবে, তবে ভালো শট নির্বাচন করতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *