ম্যাচ হেরে তাসকিনের দায় সারা মন্তব্য!

বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের ইনিংস শুরু হওয়ার পর সাঞ্জু স্যামসন ও অভিষেক শর্মা মেহেদী হাসান মিরাজের প্রথম ওভারে তাণ্ডব চালিয়ে তিন চারে ১৫ রান তুলে দেন। তবে তাসকিন আহমেদ এবং তানজিম হাসান সাকিবের সমন্বয়ে বাংলাদেশ দুই ওপেনারকে দ্রুত ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়।

ঝড়ের আগেই সূর্যকুমার যাদবকে মুস্তাফিজুর রহমানের স্লোয়ারে বোকা বানানো হয়, যা ভারতের জন্য বড় ধাক্কা। প্রথম তিন উইকেট হারিয়ে ভারত মাত্র ৪১ রানেই পড়ে যায়, যা বাংলাদেশ বোলিংয়ের শক্তিশালী প্রদর্শনের একটি উদাহরণ। বাংলাদেশের পেস বোলিং ত্রয়ী ভারতকে চাপে ফেলে দিয়েছে, এবং তাদের শুরুর দিকে দ্রুত উইকেট নিতে পারা দলের আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে দিয়েছে।

ম্যাচের শুরুতে বাংলাদেশ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, নীতিশ কুমার রেড্ডি ও রিংকু সিংয়ের অসাধারণ পারফরম্যান্সে ভারত ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। নীতিশ ৩৪ বলে ৭৪ রান ও রিংকু ২৯ বলে ৫৩ রান করে দলের স্কোর ৫ উইকেটে ১৮৫ তে নিয়ে যান। তাদের এই জুটির কারণে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জিং টোটাল দিতে সক্ষম হয় ভারত।

বাংলাদেশের ইনিংসও শুরুতে সমস্যায় পড়ে। লিটন দাস ৩ উইকেটে ৪২ রানে ফিরে গেলে দল আরও বিপাকে পড়ে, পরে তাওহীদ হৃদয়ও ফিরে যান। বাকিরা ছিলেন অস্থির এবং নিয়মিতভাবে আউট হচ্ছিলেন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ৪১ রান ৩৯ বলে আসে, যা এক প্রান্ত আগলে রেখে করতে পেরেছিলেন, কিন্তু তার ইনিংসের পরিমাণ বাংলাদেশের জন্য যথেষ্ট ছিল না।

ভারতের তরুণ ক্রিকেটারদের কাছ থেকে পাওয়া আক্রমণাত্মক ব্যাটিং বাংলাদেশের সিনিয়র ব্যাটারদের দ্বারা প্রত্যাশিত পরফরম্যান্সের তুলনায় অনেক বেশি প্রভাবশালী ছিল। শেষ পর্যন্ত, মাহমুদউল্লাহর ইনিংস কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে, যা বাংলাদেশের জন্য হতাশাজনক।

সবশেষ কয়েক বছরে টি-টোয়েন্টিতে সার্বিক উন্নতি হলেও বাংলাদেশ সেখানে ঢের পিছিয়ে। ভারতের ২২২ রানের জবাবে ৯ উইকেটে ১৩৫ রান তোলা সফরকারীদের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা তাসকিন যেন খানিকটা অসহায়ত্ব স্বীকার করলেন। নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকারের পাশাপাশি ডানহাতি তারকা পেসার জানিয়ে গেলেন, তাদের হাতে আশা আর চেষ্টা ছাড়া কোন পথ খোলা নেই।

এ প্রসঙ্গে তাসকিন বলেন, ‘আমিও দলের অংশ, আমিও খেলোয়াড়। অনেকদিন ধরে আমিও খেলছি দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের আসলে খুব একটা উন্নতি হয়নি টি-টোয়েন্টিতে। এটা আমাদের ব্যর্থতা। কিন্তু চেষ্টা কোন কমতি নেই, হচ্ছে না। দেখুন, উইকেটে দেশে যেমনই হোক কিন্তু ভালো কন্ডিশনেও আমরা প্রায়ই ফেইল করছি, ভালো উইকেটগুলোতেও।’

‘সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টিতে আমাদের উন্নতি কম। আসলে আশা আর চেষ্টা ছাড়া কিছুই করার নেই এই মুহূর্তে আমাদের হাতে। সবকিছুর সিদ্ধান্ত বোর্ড নেয়, আমরা খেলোয়াড়েরা শুধুমাত্র সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টাই করতে পারি। ব্যর্থ হলে প্রত্যেকবার উন্নতির চেষ্টাটাই শুধু হাতে আছে, আর কোন কিছু হাতে নেই।’

নাজমুল হোসেন শান্ত প্রথম টি-টোয়েন্টি হারের পর বলেছিলেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সামর্থ্যের ঘাটতি দেখেন না। তাসকিন অবশ্য বলছেন স্কিলে আরও বেশি উন্নতি করতে হবে। লম্বা সময় ধরেই বাংলাদেশের উইকেট নিয়ে বিস্তর অভিযোগ। বাংলাদেশের অধিনায়ক গত ম্যাচ শেষেও সেটা সামনে এনেছেন। ৮৬ রানে হারের পর তাসকিনও নিজেও আঙুল তুললেন দেশের উইকেটের দিকে।

শুধু তাই নয় উন্নতির জন্য সাংবাদিকদের কাছেও সমস্যা ধরিয়ে দেয়ার অনুরোধ করেছেন ডানহাতি এই পেসার। তাসকিন বলেন, ‘কারণ যদি বলেন তাহলে আমাদের স্কিল হয়ত আরও উন্নতি করতে হবে। একই সাথে দেশে আরও ভালো উইকেটে খেলতে পারলে আরও উন্নতি হবে। এগুলোই বিভিন্ন কারণ। আপনারাও অনেকদিন ধরে দেখতেছেন দুই-একটা কারণ পারলে বইলেন আমাদের চেষ্টা করবো উন্নতি করার।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *