রূপচর্চা শুধুই মেয়েদের জন্যই। এই ধারণাটা কখনই ঠিক নয়। যেহেতু ছেলেরা কাজের প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বেশি সময় থাকে তাই তাদের বেশি প্রয়োজন সঠিক পরিচর্যার। রোদে পোড়া কালো দাগ আর জীবাণু থেকে সুরক্ষিত থাকতে গরমের সময় এ পরিচর্যা আরও নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে মনে করেন রূপ বিশেষজ্ঞরা।
সারাদিনের কাজ, ধুলোবালি, রাস্তার কালো ধোয়া, রোদের তাপ- সবশেষে বাসায় ফিরে আয়নায় নিজের চেহারা দেখে অবাকই হতে হয়। কেননা মুখে কালো কালো ছোপ আর ধুলোবালিতে চেহারার উজ্জ্বলতা কোথায় যেনো হারিয়ে যায়। শুধু মেয়ে নয়, ছেলেদের ক্ষেত্রেও এটি ত্বকের কমন সমস্যা।
এ সমস্যার সমাধানে শুধু পানি বা সাবান দিয়ে মুখ ধুলেই কি সব ময়লা পরিষ্কার হয়ে যায়? অনেকের ধারণা কিছুটা এমনই। তবে এ ধারণাকে ভুল বলছেন ত্বক বিশেষজ্ঞরাও।
সঠিক পরিচর্যা নিয়মিত করলে চেহারার উজ্জ্বলতা আবার ফিরে পাওয়া সম্ভব। তাই আজকের আয়োজনে আসুন জেনে নিন ছেলেদের সহজ কিছু ত্বকের পরিচর্যা সম্পর্কে।
১। ত্বককে বাইরের ধুলোবালি ও রোদ থেকে রক্ষা করুন। কারণ বাইরের রোদের তাপ ত্বকে পিগমেন্টেশন তৈরী করতে পারে। ফলে ত্বকে সহজে কালচে ছোপ পড়ে। তাই বাইরে বের হওয়ার সময় রোদের তাপ থেকে ত্বককে দূরে রাখতে হবে। বাইরে বেশি সময় অতিরিক্ত ধুলোবালি ও কড়া রোদে কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সারাদিনে ৩ থেকে ৪ বার মুখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপ্টা দিতে হবে।
২। সপ্তাহে কমপক্ষে দুই থেকে তিন দিন মুখে স্ক্রাব করতে হবে। এখন বাজারে অনেক ধরনের স্ক্রাব পাওয়া যায়। বিশেষ করে সাইট্রিক এসিড, গ্লিসারিন অয়েল, ফ্রুট যুক্ত স্ক্রাবগুলো ছেলেদের স্কিনের জন্য অনেক ভালো হয়। কারণ স্ক্রাব ত্বক থেকে ধুলা, অতিরিক্ত তেল দূর করে স্কিনকে পরিষ্কার করে তোলে।
৩। স্ক্রাব হিসেবে চালের গুড়ার সঙ্গে লেবুর রস কাজে লাগাতে পারেন। এটা ঝটপট ত্বকে কাজ করে।
৪। রাতে ঘুমানোর আগে একটা আইস কিউব নিয়ে সম্পুর্ণ মুখে ভালোভাবে ঘষে নিন। এতে করে ত্বকে রক্ত চলাচল সচল থাকে। আর ত্বকের রক্ত সঞ্চালন প্রবাহ ভালো থাকলে ত্বক দ্রুত উজ্জ্বল হয়। এরপর যেকোনো একটা মশ্চারাইজার ক্রীম লাগিয়ে আঙ্গুল দিয়ে ঘষে ম্যাসাজ করে নিন।
৫। একটা লেবু কেটে খোসাসহ মুখে ভালভাবে ঘষে নিন। লেবুর সাইট্রিক এসিড আপনার ত্বকের অতিরিক্ত তেল, পিগমেন্টেশন, রোদে পোড়া দাগ দূর করতে সাহায্য করে। এর ভিটামিন সি মুখের কালো দাগ দূর করে ত্বককে আরো ফর্সা করতে সাহায্য করে।
৬। প্রাকিতিকভাবে ত্বককে উজ্জ্বল করতে শসা খুব উপকারী উপাদান হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিন বাসায় ফিরে মুখ ধোয়ার আগে শসার টুকরো দিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট মুখ ঘষে ঘষে পরিষ্কার করে নিন। প্রতিদিন ব্যাবহারে ত্বক অনেক পরিষ্কার হয়। এছাড়া শসার রস ত্বকে প্রাকৃতিক মশ্চারাইজার হিসেবেও কাজ করে।
৭। এক চামচ কাঁচা হলুদের সাথে কাঁচা দুধ মিশিয়ে পেস্ট তৈরী করে সম্পূর্ণ মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। কাঁচা হলুদ ত্বকের কোমলতা ধরে রাখে এবং কাঁচা দুধ স্কিনের কমপ্লেকশনকে আরো ফর্সা করতে সাহায্য করে।
৮। অ্যালোভেরার জেলোতে প্রচুর পরিমানে আন্টি-অক্সিডেন্ট থাকে যা ফাটা ত্বক সারিয়ে তুলতে অনেক উপকারী। সপ্তাহে ১ থেকে ২ দিন অ্যালোভেরা জেলো মুখে মেখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে মুখ ধুয়ে নিন। এটি ত্বকের মৃত কোষগুলো বের করে ত্বককে আরো উজ্জ্বল করে তোলে।
৯। শুষ্ক ত্বকের জন্য মধু অনেক উপকারী। আধা চামচ মধুর সঙ্গে এক টুকরো লেবুর রস মিশিয়ে মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর কুসুম গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।
১০। ত্বকের সুরক্ষায় এসব রূপচর্চার পাশাপাশি নিশ্চিত করুন সানস্ক্রিন ও রোদ চশমার ব্যবহার। সেই সঙ্গে নিয়মিত ৩ লিটার পানি পানের অভ্যাসও নিশ্চিত করবে আপনার ত্বকের সৌন্দর্য।
Leave a Reply