আন্দোলন করেও পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছি!

এইচএসসি ফলাফল প্রকাশের পর রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে শিক্ষার্থী ঐশ্বর্য বলেন, বাসায় পড়তে বসছি কিন্ত মাথায় ছিল আন্দোলন। এটা যখন তীব্র হচ্ছিল, আমাদের ভাইয়েরা যখন মারা যাচ্ছিল একের পর এক, এসব দেখে বাসায় বসে থাকতে পারিনি। আমাদের স্কুলের সামনে আন্দোলন করেছি। আর অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে পরীক্ষাও দিয়েছি। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী জিপিএ-৫ পেয়েছি।

ঐশ্বর্য বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থী এই আন্দোলনে হতাহত হয়েছে। অনেকে পরীক্ষায় বসতেও পারেনি, তারা থাকলে এখন আনন্দ করতে পারতো। তাদের জন্য খুবই খারাপ লাগছে। আমাদের এক ক্লাসমেটের পায়েও গুলি লেগেছিল। এই রেজাল্টের পেছনে আমার মা আর ভাইয়ের অবদান অনেক বেশি। আমার বাবা নেই। মা-ভাই সবসময় গাইড করেছে। এখন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। বুয়েটে পড়ার আশা আছে।’

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১১টায় স্ব স্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একযোগে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ৯টি সাধারণ ও মাদরাসা এবং কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

গত ৩০ জুন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। এতে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। প্রথম প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী- ৮ দিন পরীক্ষা হওয়ার পর কোটাসংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ১৮ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর তিন দফায় পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ১১ আগস্ট থেকে নতুন সময়সূচিতে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে স্থগিত পরীক্ষাগুলো না নিতে আন্দোলনে নামেন একদল পরীক্ষার্থী।

তাদের দাবি ছিল, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরীক্ষা বন্ধ থাকার বিষয়টি তাদের মানসিক চাপে ফেলেছে। তাই অবশিষ্ট পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে হবে। একপর্যায়ে পরীক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করা হয়। বাতিল পরীক্ষাগুলোতে এসএসসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে এইচএসসিতেও একই নম্বর দিয়ে ফল তৈরি করেছে শিক্ষা বোর্ড।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *