এবার সাকিবের জন্য মানুষের ক্ষোভ নিয়ে মুখ খুললেন : আসিফ নজরুল!

বেশ কয়েকদিন ধরেই নাটকীয়তার পর বাংলাদেশে ফেরার পথ আপাতত বন্ধ হয়ে গেল সাকিব আল হাসানের। ফলে দেশের মাটিতে তার আন্তর্জাতিক টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার ইচ্ছা অপূর্ণই থেকে যাচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচ দিয়ে সাকিব ফরম্যাটটিকে বিদায় বলতে চেয়েছিলেন। সেলক্ষ্যে দেশে ফিরতে নাকি আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে ফোনও দিয়েছিলেন তিনি।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আইয়ের একটি অনুষ্ঠানে এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই উপদেষ্টা। সাকিবের দেশে আসা নিয়ে নাটকীয়তা দেশের ইমেজের জন্য ক্ষতিকর কি না এমন প্রশ্নে আসিফ নজরুল বলেন ‘সাকিব আমাকেও কয়েকবার ফোন দিয়েছিল। আমি বলেছি, উপদেষ্টা আসিফের (ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ) সঙ্গে কথা বলে, যেহেতু এটি আমার বিষয় নয়।’

সবুজ সংকেত পেয়ে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার মাঝপথেই দুবাইয়ে থামতে হয়েছে সাকিবকে। হয়তো আবারও তাকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যেতে হবে। ইতোমধ্যে প্রোটিয়া সিরিজের প্রথম টেস্টের স্কোয়াডে সাকিবের পরিবর্তে হাসান মুরাদকে নেওয়া হয়েছে। সাবেক টাইগার অধিনায়কের যে সহসাই দেশে আসা হবে না সেটাই মোটামুটি নিশ্চিত! এর আগে সাকিবকে দেশে আসতে বলা হলেও, বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখা যায়। এমনকি শিক্ষার্থীদের একটি তাকে দল থেকে বাদ দিতে বিসিবিকে স্মারকলিপি দিয়ে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছিল।

দেশের বিভিন্ন স্থানে সাকিবের প্রতি মানুষের এই ক্ষোভকে যৌক্তিক মনে করেন আসিফ নজরুল, ‘(সাকিবের) যে সমস্ত জুয়া, বেটিং, উশৃঙ্খল আচরণ…আমার মনে হয় এটার জন্যও শেখ হাসিনার সরকার দায়ী। এমন একটি রাষ্ট্রযন্ত্র তৈরি করা হয়েছিল, যেখানে শেখ হাসিনার প্রতি অনুগত থাকলে আপনি যা ইচ্ছা করতে পারেন। আপনার শাস্তি হবে না। এটা অনেক মানুষকে বিভ্রান্ত করে, তাকেও করেছে। মায়া লাগে, কিন্তু তার প্রতি মানুষ যে ক্ষোভ দেখায়, সেটি একটুও অযৌক্তিক লাগে না।’

সাকিব রাজনীতিতে না আসলে জনপ্রিয় হয়ে থাকতে পারবে বলেও মত আইন উপদেষ্টার, ‘সাকিবের মতো ক্রিকেটার বাংলাদেশের ইতিহাসে আর আসেনি। সাকিব বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় মানুষ হয়ে থাকতে পারত। শুধু তো রাজনীতি না, এরকম একটা ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত না; আমি বিশ্বাস করতে পারি না যখন আন্দোলন চলছে, মানুষ মরছে, ঘরে ঘরে কান্না, ক্ষোভ-কষ্ট—সাকিব (মূলত সাকিবের স্ত্রী) তখন পোস্ট দিলো যে সে কোথাও আনন্দ করছে। এটা কি সম্ভব একজন মানুষের পক্ষে?’

প্রসঙ্গত, জুলাই-আগস্টে কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশ যখন উত্তাল, একের পর এক তাজা প্রাণ ঝরছিল রাস্তায়। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের পাশাপাশি ক্রীড়াঙ্গনের অনেকে ছাত্রদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানালেও নীরব ভূমিকায় ছিলেন সাকিব। এ ছাড়া বিদেশে সে সময় পরিবার নিয়ে ঘুরে বেড়াতেও দেখা গেছে তাকে। তার স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশিরই মূলত সেখানকার একটি ছবি ফেসবুকে দেন। শুধু তাই নয়, প্রবাসী দর্শকরা আন্দোলনে তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনি পাল্টা বলেছিলেন ‘দেশের জন্য আপনি কী করেছেন?’ সাকিবের এমন ভূমিকা ভালোভাবে নেয়নি ক্রিকেটপ্রেমীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *