ভারতে নারীর পেটে কাঁচি রেখেই সেলাই, ১ যুগ পর বের করলেন চিকিৎসক!

পেটের ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন এক নারী। চিকিৎসক জানান ব্যথার কারণ অ্যাপেন্ডিক্স। পরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অ্যাপেন্ডিক্স অপসারণ করা হয়। কিন্তু বাসায় ফেরার পর আবারও বাড়তে শুরু করে ব্যথা। এই ব্যথা নিয়েই এক যুগ ধরে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসকদের কাছে গেছেন ওই নারী। কিন্তু কেউই কোনও সমাধান দিতে পারেননি।

পরে গত ৮ অক্টোবর ফের একই হাসপাতালে গেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দেখা যায়, ওই নারীর পেটে কাঁচি রয়েছে; যা এক যুগ আগে অ্যাপেনডিক্স অপসারণের সময় তার পেটে রেখেই চিকিৎসকরা সেলাই দিয়েছিলেন। অত্যন্ত মর্মান্তিক এই ঘটনা ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় সিকিম রাজ্যের গ্যাংটকে।

দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক যুগের বেশি সময় আগে পেটের ব্যথা দেখা দেয় সিকিমের ওই নারীর। কেন এই পেট ব্যথা তা জানতে ও চিকিৎসা নেওয়ার জন্য কয়েকজন চিকিৎসকের কাছেও যান তিনি। হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার অ্যাপেন্ডিক্স ধরা পড়ে। ২০১২ সালে গ্যাংটকের একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অ্যাপেন্ডিক্স অপসারণ করা হয় তার।

কিন্তু এরপরও তার পেটের ব্যথা থেকে যায়। চলতি মাসের শুরুর দিকে তার পেটের ব্যথা আবারও বেড়ে যায়। তখন একই হাসপাতালে অন্য চিকিৎসকের কাছে যান ৪৫ বছর বয়সী ওই নারী। সেখানে পরীক্ষায় তার তলপেটে কাঁচি শনাক্ত হয়; যা ২০১২ সালে অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসকরা পেটে রেখেই সেলাই দিয়েছিলেন।

নারীর স্বামী বলেন, ২০১২ সালে গ্যাংটকের স্যার থুটোব নামগিয়াল মেমোরিয়াল (এসটিএনএম) হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করা হয় তার স্ত্রীর। অস্ত্রোপচারের পরও তার পেট ব্যথা করে। এ নিয়ে তিনি অনেক চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছিলেন; যারা তাকে ওষুধ দিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যথা কোনোভাবেই কমে না।

গত ৮ অক্টোবর তিনি আবারও এসটিএনএম হাসপাতালে যান। সেখানে এক্স-রেতে তার পেটে অস্ত্রোপচারের কাঁচি শনাক্ত হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল কাঁচি অপসারণের জন্য তাৎক্ষণিক অস্ত্রোপচার করেন ওই নারীর। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

পেটে কাঁচি রেখে সেলাই দেওয়ার এই খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে লোকজনের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দেয়। পরে তারা রাজ্যের হাসপাতাল ও চিকিৎসা কর্তৃপক্ষের কাছে এই ঘটনায় জবাবদিহির দাবি জানিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে।

সূত্র: এনডিটিভি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *