জুমবাংলা ডেস্ক : রাজবাড়ীর পাংশায় এক ইউপি সদস্য বিয়ে না করেই এক তরুণীর কাছে বিচ্ছেদ চাইছেন বলে জানা থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ ইউপি সদস্যকে আটক করে হেফাজতে নিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে পাংশার মাছপাড়া ইউনিয়নের কানুখালী গ্রামে। অভিযুক্ত হারুন অর রশীদ হারুন এ ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য। তিনি বলছেন, ওই মেয়ে তাঁর বিয়ে করা স্ত্রী। তাঁকে বিবাহবিচ্ছেদ না দিয়ে আরেকজনকে বিয়ে করেছেন। এজন্য বিবাহবিচ্ছেদ চাইছেন।
জানা গেছে, তরুণীর বাড়িতে অবাধ যাতায়াত ছিল হারুনের। কিশোরী বয়সেই দুবার বিয়ে হয় মেয়েটির। নানা কারণে দুবারই বিয়ে ভেঙে যায়। সর্বশেষ গত ১০ অক্টোবর মেয়েটির আবার বিয়ে হয়। এরপরই শুরু হয় জটিলতা। হারুন দাবি করেন, ওই মেয়ে তাঁর বিয়ে করা স্ত্রী। তাঁকে তালাক না দিয়ে আরেকজনকে বিয়ে করতে পারেন না। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী তরুণী জানান, হারুনের কারণে তিনি কোথাও সংসার করতে পারেননি। একদিন হারুন কৌশলে সাদা তিনটি স্ট্যাম্পে তাঁর স্বাক্ষর নেন। পরে তাঁর থেকে বয়সে ছোট একজনের সঙ্গে বিয়ে দিতে চান। কিন্তু তিনি রাজি হননি। গত ১০ অক্টোবর বিয়ের পর তিনি শ্বশুর বাড়ি যান। এরপর থেকে হারুন তাঁকে ফোন করতে থাকেন। হারুন তাঁকে বলেন, তিনি হারুনের বিয়ে করা বউ।
এ কথা শুনে তিনি চমকে ওঠেন। গত শুক্রবার তাঁর স্বামীর সাথে বাড়িতে এলে স্বামীকে আটকে রেখে ৯৫ হাজার টাকা আদায় করেন হারুন। যে সাদা স্ট্যাম্পে হারুন স্বাক্ষর নিয়েছিলেন সেই স্ট্যাম্প দেখিয়ে তাঁকে বিয়ে করা বউ বলে দাবি করছেন এবং নতুন স্বামীর সাথে সংসার করতে হলে হারুনকে তালাক দেওয়ার কথা বলছেন। তরুণী বলেন, যাকে বিয়েই করেননি তাঁকে তালাক দিতে হবে কেন?
রোববার সন্ধ্যার দিকে মোবাইল ফোনে কথা হয় অভিযুক্ত হারুন অর রশীদের সঙ্গে। তিনি বলেন, মেয়েটির দুটি বিয়ে হয়। মেয়ের মা অর্থলোভী। দুই জায়গা থেকে টাকা পয়সা নিয়ে ভেঙে দেন বিয়ে। পরে তাঁকে জালে ফাঁসিয়ে দেন। তিনি ইউপি সদস্য হওয়ায় বিষয়টা গোপন রাখেন। গত ১০ অক্টোবর ওই মেয়েকে আবার বিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় তিনি বলেছেন, গোপনে বিয়ে হয়েছে গোপনেই তাঁকে তালাক দেওয়া হোক। কিন্তু তালাক না দিয়ে উল্টো তাঁর বিরুদ্ধেই থানায় অভিযোগ দেন তরুণী।
এক প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, ২০২২ সালের মে মাসে তাদের বিয়ে হয় আদালতে। মেয়ের মা শুধু বিষয়টা জানেন। বিয়ের পর মেয়ে তাঁর বাবার বাড়িই থাকতেন।
যখন বিয়ে করেন তখন মেয়ের বয়স ছিল ১৬ বছর। অপ্রাপ্তবয়ষ্ক একটি মেয়েকে কেন বিয়ে করলেন– এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, এর আগে মেয়েটির দুবার বিয়ে হয়।
বিয়ের সময় প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে হারুন বলেন, না নেওয়া হয়নি। তিনি বিয়ে করতে চাননি। তারা ষড়যন্ত্র করে তাঁকে ফাঁসিয়েছে। এ কারণে বাধ্য হয়েছেন। মেয়ের বর্তমান স্বামীর কাছ থেকে ৯৫ হাজার টাকা আদায় প্রসঙ্গে বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তিনি এখন মুক্তি চান।
পাংশা থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বামীর সাথে সংসার করতে মেয়েটির বাধা নেই। অভিযুক্ত হারুন অর রশীদকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে।
Leave a Reply