ভাত রান্না করতে দেরি হওয়ায় গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যা!

চাঁদপুরের মতলব উত্তরে পারিবারিক কলহের জেরে এক গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকালে উপজেলার ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়নের মেঘনা ধনাগোধা নদীর নবুরকান্দি বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ঘাতক স্বামী মো. ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নিহত গৃহবধূ ফেরদৌসী আক্তার আন্না (২৫) উপজেলার গাজীপুর বাগবাড়ী গ্রামের মো. ইয়াছিনের স্ত্রী ও নবুরকান্দি গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়ালের মেয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্বামী মো. ইয়াসিনের সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে ভাত রান্না করতে দেরি হওয়ায় কথা-কাটাকাটি হয় ফেরদৌসীর। এক পর্যায়ে স্বামী মো. ইয়াসিন রাগান্বিত হয়ে স্ত্রী ফেরদৌসের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন এবং গলাটিপে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেন। পরদিন সকালে নদীর পারে লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয় এলাকাবাসী। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।

ফেরদৌসীর বড় বোন মনোয়ারা বলেন, ‘আমার ছোট বোনের স্বামীর অন্য মেয়ের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। ছোট বোন এ বিষয়ে জেনে পরকীয়ায় বাধা দিলে তাকে প্রতিনিয়ত মারধর করত। কিছুদিন আগেও পরকীয়ায় ধরা পড়ে জরিমানা দিয়ে ছাড়া পায় ইয়াছিন। শুক্রবার রাত ৩টার দিকে ইয়াসিন আমার মায়ের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বলে আপনার বোনকে খুঁজে পাচ্ছি না।

সে আপনাদের বাড়িতে গিয়েছে কি না। আমরা ভোরে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি ঘরের দরজায় তালা দেওয়া। পরে লোকের মুখে শুনতে পাই আমার বোনকে মেরে নদীর তীরে ফেলে রেখেছে।’

নিহত ফেরদৌসী আক্তারের বড় ছেলে মো. আব্দুলাহ (৭) বলে, ‘ভাত রান্নার কথা বলে আমার আব্বু রাতে আম্মুকে গ্যাসের চুলার আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেন এবং গলা টিপে হত্যা করে জামাকাপড় পরিবর্তন করেন। পরে অটোরিকশায় তুলে আম্মুকে একটু দূরে নিয়ে গিয়ে নদীতে ফেলে দেন।


মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রবিউল হক জানান, খবর পেয়ে তিনি এবং মতলব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল কবিরসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে সন্ধ্যায় হত্যা মামলার পর আটক মো. ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *