চট্টগ্রাম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশকে ইনিংস এবং ২৭৩ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজয়ের মুখোমুখি হতে হলো। প্রথম ইনিংসে প্রোটিয়ারা ৫৭৫ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে এবং বাংলাদেশের ব্যাটারদের ব্যর্থতায় এই বিশাল ব্যবধান তৈরি হয়। দুই ইনিংসে মিলিয়েও বাংলাদেশ ৩০০ রানে পৌঁছাতে পারেনি, যা দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই জয়ের ফলে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে দক্ষিণ আফ্রিকা চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং ইনিংসে তিনজন ব্যাটার সেঞ্চুরি করেন, যা তাদের একটি বড় স্কোর গড়তে সহায়তা করে। বোলিং বিভাগেও দারুণ পারফর্ম করে কাগিসো রাবাদা এবং কেশব মহারাজ। তারা দুইজনেই প্রথম ইনিংসে পাঁচটি করে উইকেট লাভ করেন, অন্যদিকে অলরাউন্ডার সেনুরান মুথুসামি চারটি উইকেট শিকার করেন।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে। স্কোর ছিল মাত্র ৪৮ রানে ৮ উইকেট। এরপর মুমিনুল হক এবং তাইজুল ইসলাম ১০৩ রানের জুটি গড়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। মুমিনুল করেন ৮২ রান, যা বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ স্কোর ছিল, তবে অন্য ব্যাটারদের ব্যর্থতায় দলটি ১৫৯ রানে অলআউট হয়।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ আবারও ব্যাট করতে নেমে দ্রুত উইকেট হারায় এবং দক্ষিণ আফ্রিকার পেস এবং স্পিন বোলিং আক্রমণের সামনে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়। কাগিসো রাবাদা এবং কেশব মহারাজ আবারও বাংলাদেশের ব্যাটারদের চাপে ফেলেন এবং শেষ পর্যন্ত দিন শেষ হওয়ার আগেই বাংলাদেশ অলআউট হয়ে যায়।
এই ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিং দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা শুরু থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে ছিল। বাংলাদেশের জন্য এই পরাজয় হতাশাজনক হলেও এটি ভবিষ্যতের জন্য ভালো করার এক বড় শিক্ষা হিসেবে কাজ করতে পারে।
হারার পর বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, “দক্ষিণ আফ্রিকা দারুণ খেলেছে। আমরা যে পারফরম্যান্স করেছি, তাতে হতাশ। ব্যাটিংটা মোটেও ভালো হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে উন্নতির প্রয়োজন। কিছু সময় আমরা ভালো বল করেছি, তবে সামগ্রিকভাবে আমাদের উন্নতি দরকার। শুধু মানসিক নয়, মানসিক ও দক্ষতা উভয় ক্ষেত্রেই উন্নতির প্রয়োজন। তাইজুলের বোলিং এবং প্রথম ইনিংসে মুমিনুলের খেলায় লড়াইয়ের মানসিকতা দেখেছি, যা ইতিবাচক। এমন চরিত্র আমাদের টিমে দরকার। যেমনটা তাইজুল করেছে, শতরানের জুটি গড়েছে—এটা দেখায় আমরা ব্যাট করতে পারি। এখন আমাদের টপ অর্ডার ব্যাটারদের দায়িত্ব নিতে হবে।”
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
সাউথ আফ্রিকা (প্রথম ইনিংস)- ৫৭৫/৬ (১৪৪.২ ওভার) (ইনিংস ঘোষণা) (ডি জর্জি ১৭৭, স্টাবস ১০৬, মুল্ডার ১০৫*, মথুসামি ৭০*, বেডিংহাম ৫৯; তাইজুল ৫/১৯৮);
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)- ১৫৯/১০ (৪৫.২ ওভার) (মুমিনুল ৮২, তাইজুল ৩০; রাবাদা ৫/৩৭)।
বাংলাদেশ (দ্বিতীয় ইনিংস)- ১৪৩/১০ (৪৩.৪ ওভার) (জাকির ৭, জয় ১১, শান্ত ৩৬, হাসান ৩৮*)
Leave a Reply