ভালোবেসে কিংবা শখ করে অনেক প্রেমিকাই নিজ হাতে রান্না করে তার প্রেমিককে সুস্বাদু খাবার খাইয়ে খুশি করেন। কিন্তু কখনো যদি কোনো প্রেমিকার হাতের রান্না করা খাবার খেয়ে কোনো প্রেমিকের মৃত্যু হয় তা নিঃসন্দেহে খুব মর্মান্তিক বিষয়। সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে ঝালকাঠিতে। প্রেমিকার বানানো নুডুলস খেয়ে সজল দেবনাথ নামের এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। রহস্যজনক এই মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাজুড়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
গেল সোমবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে মৃত্যু হয় প্রেমিক সজল দেবনাথের। তিনি ঝালকাঠি সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তার পিতা সদরের জেলেপাড়ার বাসিন্দা সনাতন দেবনাথ।
সজলের পরিবারের সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাতে জগদ্ধাত্রী পূজার উৎসবে যোগদান শেষে বাসায় ফিরে ঘুমিয়ে পড়ে সজল। এরপর আনুমানিক রাত ১টা ৩০ মিনিটের দিকে হঠাৎ গোয়ানীর শব্দ পেয়ে ঘরের পাটাতনে গিয়ে পরিবারের লোকেরা দেখতে পায় যে- সজল পা বাধা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এসময় সজলের কথিত প্রেমিকা তিথিকেও খাটের নিচে পাওয়া যায়। এরপর দ্রুত ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয় সজলকে। সোমবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন সজল।
সজলের বড় বোনের অভিযোগ, সজলের মৃত্যু নিয়ে পরিবারের সকলের মনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, সজলের বান্ধবী তিথির বাসা থেকে আনা নুডুলস খাওয়ার পরই সজলের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তার ধারণা, নুডুলসে কোনো বিষাক্ত পদার্থ থাকতে পারে, যা সজলের মৃত্যুর কারণ।
এ বিষয়ে মৃত সজলের প্রেমিকা তিথি জানান, তাদের সম্পর্ক দুই বছর ধরে চলছে। জগদ্ধাত্রী পূজার দিন সজল ও তিথি একসঙ্গে কিছুক্ষণ সময় কাটান এবং তিথি তার বাসা থেকে সজলের জন্য নুডুলস নিয়ে আসেন। এরপর একটি প্রসঙ্গ নিয়ে সজলের সঙ্গে তার তর্ক-বিতর্ক হয়। তিথি জানান, সেই রাতে সজল তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতনও করেছে। তবে সজলের খাবারে বিষ মেশানো এবং তার সঙ্গে রাত্রিযাপনের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিথি।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার এটিএম মেহেদী হাসান সামি জানান, সজলকে গভীর রাতে হাসপাতালে আনা হয় এবং দীর্ঘক্ষণ চিকিৎসা চললেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। সজলের মৃত্যু রহস্যজনক বলে মনে হলেও, ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যূর সঠিক কারণ উদঘাটন করা সম্ভব নয়।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, এই রহস্যজনক মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ণয়ের জন্য ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
Leave a Reply