বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সাবেক নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন আদালত নামঞ্জুর করলে,আদালত চত্বরে তাণ্ডব’ চালায় তার কয়েক’শ অনুসারী। এ সময় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন। তার মাথা ইট দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।
নিহত ওই আইনজীবী চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি এলাকার জামাল উদ্দিনের ছেলে। ২০১৮ সালে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য হন। পরে তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবেও নিবন্ধন পান। সম্প্রতি তিনি চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আলিফকে মৃত ঘোষণা করেন। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আদালত ভবনের প্রবেশমুখে রঙ্গম কনভেনশন হলের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিবেদিতা ঘোষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এবার সাইফুল ইসলামের সোস্যাল মিডিয়ায় সাম্প্রতিক পোস্টগুলো খেয়াল করলে দেখা যায়, তিনি ইসকন নিষিদ্ধসহ সংগঠনটির নানা বিষয় নিয়ে সরব ছিলেন।নিজের ফেসবুকের ইন্ট্রোতে আলিফ লিখেছেন, ‘আমি আমার মতোই আর এভাবেই থাকতে চাই, কারণ আমি মুখোশ পরি না, আর মুখোশধারীদের পছন্দও করি না।‘
অন্য একটি পোস্টে ৭ই নভেম্বর ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবির পক্ষে অবস্থান নিয়ে মো. ওবায়দুল আকবরের একটি পোস্ট শেয়ার করেন আইনজীবী আলিফ। সেখানে লেখা ছিল, ‘ইস্কন আর সনাতন এক নয়। সনাতন একটা ধর্ম! ইস্কন হলো সংগঠন। দেশকে উগ্রবাদী অস্থিতিশীল করার চেষ্টাকারী উক্ত সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা অতীব জরুরি। দেশপ্রেমিক সনাতনী ভাইয়েরাও আওয়াজ তুলুন উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে।’
২২ আগস্ট ২০২৪ বন্যাকালীন সময়ের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন,ধর্মের নামে এই দেশের একতা ভাঙ্গতে পারবেন না।
গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর টেরিবাজার এলাকায় হাজারী গলিতে ইসকন সদস্যের হামলার ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে সোচ্চার ছিলেন আইনজীবী আলিফ। ওই ঘটনায় পুলিশের ব্রিফিংয়ের ভিডিও শেয়ার করে ক্যাপশনে আলিফ লেখেন, ‘এখানে যারাই জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হউক।’
সর্বশেষ পোস্ট ভালো উদ্যোগ লিখে আজ দুপুর ১২টা ৪৩ মিনিটে ফেসবুকে সবশেষ একটি পোস্ট শেয়ার করেন এই আইনজীবী। ওই পোস্টে লেখা ছিল, ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল ছাত্র সংগঠন একসাথে হয়ে আগামী এক সপ্তাহ “জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ” পালন করবে। ৫ই আগস্টের পর এই প্রথম সব ছাত্র সংগঠন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে একই কর্মসূচি পালন করবে।
তার সাম্প্রতিক সময়ের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে নেট দুনিয়ায় অনেক আলোচনায় মেতেছেন।অনেকে অনেক মন্তব্য করলেও সর্বশেষ, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় আইনজীবী হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে যথাযথ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।তদন্ত শেষেই আসলে প্রকৃত সত্য উঠে আসবে বলে মানুষ মনে করছেন।
Leave a Reply