ভারত-বাংলাদেশের একসময়ের মধুর সম্পর্ক এখন তিক্ত কেন, যা জানালো নিউইয়র্ক টাইমস!

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক বর্তমানে একটি উত্তপ্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। যার ফলে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের টানাপোড়েন বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েক মাসে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে একটি হিন্দু পুরোহিতের গ্রেপ্তারের পর। গত ৫ আগস্টের পর শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেয়ার পর বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের আরো খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে জানা গেছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই সময়টাতে বেশ উদ্বিগ্ন। তার সরকার বিশ্বাস করছে, শেখ হাসিনা ভারতে বসে বাংলাদেশের ক্ষমতায় ফিরে আসার জন্য ষড়যন্ত্র করছেন। একইসঙ্গে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতারা অভিযোগ তুলেছেন, ভারত রাজনৈতিক সুবিধা হাসিলের জন্য, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর আক্রমণকে অতিরঞ্জিত করে তুলে ধরছে।

এই উত্তেজনার মূল ঘটনা হিসেবে চট্টগ্রামের হিন্দু পুরোহিত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। একসময় ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) নামক সংগঠনের সদস্য ছিলেন তিনি। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় একেবারেই কম (প্রায় ১০ শতাংশ) হলেও সম্প্রতি বেশ কিছু ঘটনায় তারা লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ আদালত তাকে ঔপনিবেশিক যুগের রাষ্ট্রদ্রোহ আইন অনুযায়ী কারাগারে পাঠিয়েছে।

গ্রেপ্তারের পর, চিন্ময়ের সমর্থকরা আদালত ঘিরে প্রতিবাদ জানালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খায় এবং এক মুসলিম আইনজীবী হত্যার ঘটনা ঘটে। যদিও হত্যাকারীদের পরিচয় এখনো পরিষ্কার নয়, তবে পুলিশ এই সহিংসতার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মাধ্যমে ন্যায্য দাবি তুলতে গিয়ে ধর্মীয় নেতা এক আইনগত প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হয়েছেন। বিষয়টি তাদের জন্য দুঃখজনক। একই সময়, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার জন্য দোষীদের অব্যাহতি দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি সমালোচনা করা হয়েছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে। যদিও শেখ হাসিনার শাসনামলে ভারতীয় সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে কিছু চরমপন্থী গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল, তবে তার শাসনামলে হিন্দুদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *