কেন ইতালীয় তরুণরা গণহারে দেশ ত্যাগ করে চলে যাচ্ছে?

ইতালির তরুণদের দেশ ত্যাগের প্রবণতা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।গত ১০ বছরে ১ মিলিয়নেরও বেশি ইতালীয় দেশ ছেড়ে চলে গেছেন, যার মধ্যে ২৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সী তরুণদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। দেশটির বর্তমান পরিস্থিতি, কম বেতন, কাজের প্রতি স্বীকৃতির অভাব, এবং বিদেশে উন্নত সুযোগের কারণে, বহু তরুণ ইতালি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।

২৪ বছর বয়সী বিলি ফুস্তো, যিনি ইতালির দক্ষিণাঞ্চল ক্যালাব্রিয়া থেকে এসেছেন, বলছেন, “আমি ধনী হতে চাই না বা বড় দায়িত্ব নিতে চাই না, বরং আমি চাই একটি শান্ত জীবন যেটাতে আমাকে বাজারে যেতে ১৫ ইউরো না থাকার চিন্তা করতে হবে না। কিন্তু বর্তমানে ইতালিতে এমন নিশ্চয়তা নেই।”বেশিরভাগ তরুণ, বিশেষত গ্র্যাজুয়েটরা, তাদের কর্মজীবনের জন্য উপযুক্ত সুযোগ না পেয়ে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছেন। এই প্রবণতা একদিকে যেমন উদ্বেগজনক, অন্যদিকে ইতালি সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করা তরুণদের মধ্যে অভিবাসন বৃদ্ধি পাচ্ছে।তাদের অভিযোগ, ইতালির চাকরির বাজারে অনেক সময় বেতনের পরিমাণ স্পষ্ট করা হয় না এবং এটি অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের তুলনায় অনেক কম। এ ছাড়া, দেশটির উত্তরাঞ্চলেও অনেক তরুণেরা কাজের অভাব বা অস্বাভাবিক শর্তে জর্জরিত। ইতালি এমন একটি দেশ যেখানে প্রকৃত বেতন ২০১৯ সালের পর কমে গেছে এবং যুবকদের মধ্যে বেকারত্বের হার ইউরোপীয় গড় থেকে বেশি, যা বর্তমানে ১৭.৭ শতাংশ।

ইতালির “ব্রেন ড্রেইন” অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত, দেশটির অভিবাসনের কারণে আনুমানিক ১৩৪ বিলিয়ন ইউরো ক্ষতি হয়েছে। তবে, কিছু তরুণ ফেরত আসার চেষ্টা করছেন শুধুমাত্র পারিবারিক কারণে।

এছাড়া, ইতালি সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশে থাকা বিশেষজ্ঞ ও দক্ষ কর্মীদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য কিছু সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে, তবে এটি পুরোপুরি সফল হতে আরো প্রচেষ্টা প্রয়োজন। ইতালির জন্য এই তরুণদের দেশ ত্যাগ একটি বড় বিপদ, কারণ আগামী কয়েক দশকে দেশের বয়সভিত্তিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারনে আগামী ২০-৩০ বছরের মধ্যে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।

এত সব সমস্যা সত্ত্বেও, সরকার যদি সত্যিই কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ নেয় তবে এই দেশ ত্যাগ থামানো সম্ভব। তবে, তরুণদের হতাশা কমাতে ইতালি কর্তৃপক্ষকে আরও কার্যকরী সমাধান খুঁজতে হবে। তথ্যসূত্র : খালিজ টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *