বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানি করতে বাধ্য হচ্ছেন!

সম্প্রতি প্রকাশিত ইকোনমিস্ট টাইমসের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশে ব্যবসায়ীরা পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য ও সামুদ্রিক সম্পর্ক শক্তিশালী হওয়ায় ভারতীয় উদ্বেগ বাড়ছে। সম্প্রতি পাকিস্তানের করাচি থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে একটি দ্বিতীয় কার্গো জাহাজ এসে পৌঁছেছে। প্যানামা-ফ্ল্যাগড ‘এমভি ইউয়ান শিয়ান ফা ঝান’ নামক জাহাজটি রোববার বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করেছে।

এই জাহাজটি করাচি, পাকিস্তান এবং দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত হয়ে চলাচল করেছে এবং এতে ৮১১টি কন্টেইনার রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমন সোডা অ্যাশ, ডোলোমাইট, মার্বেল ব্লক, পাশাপাশি গার্মেন্টস কাঁচামাল, চিনি এবং ইলেকট্রনিক পণ্যও।

ভারতের জন্য উদ্বেগ

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ব্যবসায়ীরা পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানি করতে বাধ্য হচ্ছেন। বাংলাদেশে কিছু শিপিং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ভারতের সঙ্গে চুক্তি পুনঃমূল্যায়নের প্রস্তাব দিয়েছেন, যা ভারতকে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করার অনুমতি দেয়।

চট্টগ্রাম বন্দর বঙ্গোপসাগরের একটি কৌশলগত স্থান এবং ভারতের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ। ২০০৪ সালে এই বন্দর থেকে চীনী অস্ত্রের একটি বড় চালান উদ্ধার করা হয়েছিল, যা পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই দ্বারা পরিকল্পিত ছিল এবং এটি ভারতের অবৈধ বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইউএলএফএ (ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম) কাছে পৌঁছানোর কথা ছিল।

ভারতীয় উদ্বেগ আরও বাড়ছে কারণ সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ পাকিস্তানের জাহাজের জন্য প্রয়োজনীয় শারীরিক পরিদর্শন নির্দিষ্ট নিয়ম বাতিল করেছে, যার ফলে পাকিস্তানের জাহাজগুলো এখন সহজেই বাংলাদেশের সমুদ্রপথ ব্যবহার করতে পারবে।

বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক

ইকোনমিস্ট টাইমসের সেই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন নেতা প্রফেসর ইউনুস গত আগস্টে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তিনি শেখ হাসিনার সরকারের পাকিস্তান-বিরোধী নীতির প্রবল বিরোধী। তার শাসনামলে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

নভেম্বরে পাকিস্তান থেকে প্রথমবারের মতো সরাসরি বাণিজ্যিক জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়, যা ১৯৭১ সালের পর দুই দেশের মধ্যে প্রথম সরাসরি সামুদ্রিক যোগাযোগ। ইউনুস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে দুবার সাক্ষাৎ করেছেন এবং তাদের আলোচনায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দীর্ঘকালীন বিষয়গুলি সমাধান করার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।

সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *