চরম দু:সংবাদ : মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বিপিএল!

বিপিএল-এর (বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ) এবারের আসর নিয়ে বড় সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে, রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজির আর্থিক অব্যবস্থাপনা এবং খেলোয়াড়দের বেতন সংক্রান্ত জটিলতা গোটা টুর্নামেন্টকে অনিশ্চয়তার মুখে ফেলে দিয়েছে। রাজশাহী দলে খেলছেন জাতীয় তারকা তাসকিন আহমেদসহ অনেক ক্রিকেটার, কিন্তু এখনও তারা তাদের প্রাপ্য পারিশ্রমিক পাননি। এমনকি দৈনিক ভাতাও (ডে অ্যালাউন্স) এখনো পরিশোধ করা হয়নি।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের আর্থিক সংকট এতটাই গভীর যে, টুর্নামেন্ট মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ক্রিকেটারদের দাবি, টাকার অভাবে তারা খেলতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। একাধিক খেলোয়াড় অনুশীলনে অংশ নিচ্ছেন না এবং ম্যাচে না খেলার হুমকিও দিয়েছেন।অনলাইনে লাইভ খেলা দেখুনঅনলাইনে লাইভ খেলা দেখুন

রাজশাহী দলের এক ম্যানেজমেন্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দলের মূল মালিক বিদেশে অবস্থান করছেন এবং তার অনুপস্থিতিতে দলের আর্থিক লেনদেন কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। এমনকি মালিক কর্তৃক প্রদত্ত চেকও বাউন্স করেছে।

তাসকিন আহমেদ, যিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা পেসার এবং সাম্প্রতিক উইসডেন সেরা একাদশে জায়গা পেয়েছেন, তিনিও তার প্রাপ্য পারিশ্রমিক পাননি। তাসকিন এবারের বিপিএলে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর তালিকায় রয়েছেন এবং তার পারফরম্যান্স গোটা টুর্নামেন্টে আলোচিত হয়েছে। কিন্তু এত সাফল্য সত্ত্বেও, তার এবং তার সতীর্থদের আর্থিক সংকট মেটেনি।

রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজির খেলোয়াড়রা নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে খাবার খাচ্ছেন এবং দৈনন্দিন খরচ সামলাচ্ছেন। তারা দলের আর্থিক ব্যবস্থাপনার অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং এই পরিস্থিতিকে লজ্জাজনক বলে বর্ণনা করেছেন।

অন্যদিকে, রাজশাহী দলের বিদেশি খেলোয়াড় এবং কোচিং স্টাফদের প্রাপ্য পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে, এ নিয়ে দেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে অসন্তোষ আরও বেড়েছে।

বিশ্বমানের খেলোয়াড়দের পরিবর্তে রাজশাহী দলে আনা হয়েছে দীর্ঘদিন খেলার বাইরে থাকা বিদেশি খেলোয়াড়রা। তাদের সাম্প্রতিক ফর্ম বা অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের ভূমিকা নিয়েও তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। ক্রিকেটারদের অভিযোগ, বিসিবি আর্থিকভাবে অদক্ষ ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে লিগে অংশগ্রহণ করতে দিয়েছে, যার ফলে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে।অনলাইনে লাইভ খেলা দেখুন

বিশ্লেষকরা বলছেন, একটি পেশাদার লিগে এমন পরিস্থিতি ক্রিকেটারদের মনোবলে আঘাত হানার পাশাপাশি লিগের মর্যাদাও ক্ষুণ্ন করছে।

বিপিএল-এর ইতিহাসে এত বড় সংকট আগে কখনো দেখা যায়নি। টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচগুলো আদৌ অনুষ্ঠিত হবে কিনা, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে। রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজির এই অব্যবস্থাপনা পুরো লিগের জন্য নেতিবাচক উদাহরণ তৈরি করেছে।

বিসিবি যদি দ্রুত কোনো সমাধান না করতে পারে, তবে বিপিএল-এর এবারের আসর মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ক্রিকেটপ্রেমীরা হতাশ এবং খেলোয়াড়রা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত।

শেষ কথা: বিপিএল-এর মতো বড় টুর্নামেন্টে এমন ঘটনা শুধু লজ্জাজনকই নয়, বরং এটি দেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করবে। রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজির মতো পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে এমন ভুল এড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *