খাবারের পাশাপাশি শরীরে ভিটামিন, ক্যালশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ উপাদান থাকা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু অনেকেই মনে করেন যে, খাবার থেকে যথেষ্ট ক্যালশিয়াম পাওয়া যায় না। এই কারণেই তারা ক্যালশিয়াম সাপ্লিমেন্ট খেতে শুরু করেন। বিশেষত যারা দুধ বা দুগ্ধজাত পণ্য এড়িয়ে চলেন, তারা ক্যালশিয়াম সাপ্লিমেন্টের উপর বেশি নির্ভরশীল। তবে, অতিরিক্ত ক্যালশিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের ফলে তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ দিলীপ কুমার জানিয়েছেন, ক্যালশিয়াম সাপ্লিমেন্ট অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে হৃদ্রোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। যারা দীর্ঘ সময় ধরে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই সাপ্লিমেন্ট নিয়মিত গ্রহণ করেন, তাদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা অনেক বেশি।
অতিরিক্ত ক্যালশিয়াম শরীরে জমা হয়ে ক্যালশিয়াম ডিপোজিট তৈরি করতে পারে, যা গলব্লাডার স্টোন, কিডনি স্টোন এবং হার্ট ব্লকেজের মতো জটিল সমস্যার কারণ হতে পারে। ধমনীর মধ্যে জমে থাকা অতিরিক্ত ক্যালশিয়াম রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে, যার ফলে অক্সিজেনের সরবরাহ কমে গিয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।
ডাঃ অরুণাংশু তালুকদার জানিয়েছেন, ১৯-৫০ বছর বয়সীদের জন্য দৈনিক ১০০০ মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম প্রয়োজন। ৫১-৭০ বছর বয়সী মহিলাদের ক্ষেত্রে এই চাহিদা ১২০০ মিলিগ্রাম। আড়াইশো মিলিলিটার দুধ, একটি ডিম, ১০০-১৫০ গ্রাম মাছ এবং সবুজ শাকসবজি থেকে এই প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা সম্ভব।
যদি ক্যালশিয়াম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতেই হয়, তবে তা খাবারের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে খেতে হবে। ৫০০ মিলিগ্রামের একটি ট্যাবলেট খেলে, খাবারের মধ্যে সেই অনুযায়ী সামঞ্জস্য বজায় রাখতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা উচিত নয়। সাধারণত, তিন মাস সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পর কিছুদিন বিরতি দেওয়া এবং সেই সময়ে খাবার থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত করা উচিৎ।
Leave a Reply