গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরই প্রেক্ষিতে ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এছাড়া, একই দাবিতে যমুনা টিভির আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ডও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা দেখা যায়।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার উপস্থিত হওয়ার দাবিটি সঠিক নয় বরং, উক্ত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি ভিন্ন দুইটি ভিডিও ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া, যমুনার টিভির ফটোকার্ডটিও ভুয়া।
শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, এটির প্রথম অংশে এনটিভির লোগো রয়েছে এবং দ্বিতীয় অংশে যমুনা টিভির লোগো রয়েছে।
লোগোগুলোর সূত্রে এনটিভির ইউটিউব চ্যানেলে গত ২০ জানুয়ারি এবং যমুনার টিভির ইউটিউব চ্যানেলে ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত দুইটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওগুলোর সাথে আলোচিত ভিডিওর মিল রয়েছে।
এনটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আগ মূহুর্তের প্রস্তুতি জানাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুক্ত হয়েছিলেন এনটিভির ব্যুরো প্রধান। তবে, তিনি শেখ হাসিনার উপস্থিত হওয়া সংক্রান্ত কোনো তথ্য এই প্রতিবেদনে ছিল না।
এছাড়া যমুনা টিভির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের মহাসচিবের দেওয়া মধ্যাহ্নভোজের দাওয়াতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা উপস্থিত হয়। সেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে শেখ হাসিনার দেখা যায়।
অর্থাৎ, উক্ত ভিডিওগুলোতে গত ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার উপস্থিত হওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
পরবর্তী অনুসন্ধানে, যমুনার টিভির ডিজাইন সম্বলিত ফটোকার্ডটির বিষয়ে অনুসন্ধানে যমুনা টিভির ফেসবুক পেজ, ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলে এসংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড বা সংবাদ পাওয়া যায়নি।
এমনকি আলোচিত ফটোকার্ডটির সাথে যমুনা টিভি কর্তৃক প্রকাশিত ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ফন্টের মধ্যেও পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
পাশাপাশি, প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচিত দাবির সপক্ষে কোনো তথ্য গণমাধ্যম ও বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া যায়নি।
সুতরাং, ভিন্ন দুইটি ভিডিও যুক্ত করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার উপস্থিত হওয়ার দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং যমুনা টিভির ফটোকার্ডটিও ভুয়া।
Leave a Reply