বড় পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে বাংলাদেশের শাসনতন্ত্রে!

১৯৭১ সালের স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশে এ যাবত মোট ১২ টি সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি নির্বাচন নিয়ে জয়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল বিরোধীদের। ১২ টির ৪ টি নির্বাচনই ছিল নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে৷ বাকিগুলো দলীয় ও সামরিক অধীনে হয়েছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নির্বাচনে কারচুপির ক্ষেত্রে হাসিনা সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠেছিলেন। আওয়ামী সরকারের আমলে সর্বশেষ ডামি নির্বাচন হিসেবে দেশ-বিদেশে পরিচিতি পেয়েছে। প্রথম নির্বাচনেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বিরুদ্ধেও ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ আছে।

গত বছরের ৫ ই আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুথানে হাসিনা পালিয়ে ভারতে যান। তারপর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে সংস্কারে হাত দেন। যার ফলে, আগামীতে বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আসছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সরকার প্রায় ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। তিনমাস ধরে মতামত সংগ্রহ করে কয়েকটি কমিশন ইতিমধ্যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এরমধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা ও সংবিধান সংস্কার কমিশন যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে সেগুলো যদি বাস্তবায়ন হয় তবে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থায়।

অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে লক্ষ্যে একটি কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেড়শ সুপারিশ রেখেছে বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।

প্রতিবেদনে লেজুড়বৃত্তিক সংগঠন নিষিদ্ধ, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ ও স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না রাখার সুপারিশ রাখা হয়েছে। এছাড়া ইবিএম ব্যবস্থা বাতিল ও ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে পুনরায় ভোট গ্রহণের প্রস্তাব, না ভোটের বিধান প্রস্তাব, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতার বিধান বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এছাড়াও নতুন দলের নিবন্ধন শর্ত শিথিল, সদস্য তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ বাধ্যতামূলক ও অপরাধ ও সাজাপ্রাপ্তদের দলের সদস্য হতে না পারা, গোপন ভোটে দলীয় কমিটি দলের ভিতরে গণতন্ত্রের চর্চা, দলীয় তহবিল ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আয়-ব্যয়ের হিসাব বাধ্যতামূলকভাবে নিরিক্ষার কথা বলা হয়েছে। প্রার্থীর মনোনয়ন পত্রের সাথে ৫ বছরের আয়কর রিটার্ন জমা এবং মিথ্যা তথ্য প্রদানে প্রার্থীতা বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।

এছাড়া সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে অনিয়মের চিত্র তুলে ধরার সুযোগ দেওয়ার কথাও তোলা হয়েছে। এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন হলে গণতন্ত্র ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে বলে কমিশন আশা প্রকাশ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *