টাঙ্গাইলের সাবেক এমপি ছানোয়ার হোসেনকে কেন চড় থাপ্পড় মেরেছিলেন ওবায়দুল কাদের? কী ঘটেছিল সেদিন? শত শত মানুষের সামনে দলীয় একজন এমপিকে কেন মারধর করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক?
২০১৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। তখনকার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী গিয়েছিলেন রাজশাহী সফরে। সেখান থেকে ফেরার পথে যমুনা রিসোর্টে তাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার আমন্ত্রণ জানান, তখনকার টাঙ্গাইল ৪ আসনের এমপি হাসান ইমাম খান ওরফে সোহেল হাজারী। রির্সোর্টে বিশ্রাম নিতে রাজী হন কাদের। সোহেল হাজারীকে প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখতে বলেন তিনি।কিন্তু রিসর্টে পৌঁছে একটি কক্ষে মাত্র আধা ঘণ্টা অবস্থান করেছিলেন কাদের। এর মধ্যেই এমপি ছানোয়ার এর চড় কাণ্ড ঘটে ৷ রাত ৮ টা ৩০ এর দিকে রাজশাহী থেকে যমুনা রিসোর্টের পদ্মা রেস্ট হাউসে পৌঁছান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তখন সেখানে উপস্থিত বহু মানুষ।
ওবায়দুল কাদের আগমন উপলক্ষে সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন ও অনুপম শাহজাহান জয় নেতৃত্বে স্থানীয় অসংখ্য নেতাকর্মী জড়ো হন সেখানে।হাজির হন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকও ।কিন্তু ব্যাপারটি মোটেও এরকম হওয়ার কথা ছিল না। বিশ্রামের আমন্ত্রণ জানিয়ে সেখানে জনসমাগম হলে মেজাজ খারাপ হওয়া স্বাভাবিক। তাই রিসোর্টে গিয়ে এত নেতাকর্মী দেখে ভ্রু কুঁচকে যায় ওবায়দুল কাদেরের। এর উপর শুরু হয় স্লোগান৷ এতে আরও ক্ষেপে যান তিনি। সবচেয়ে বেশি ক্ষিপ্ত হন সেখানে সোহেল হাজারীকে না দেখে। কারণ সোহেল হাজারী তাকে আপ্যায়ন করতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
স্বাভাবিক ভাবেই ওবায়দুল কাদের পৌঁছে সোহেল হাজারীকে না দেখে প্রথমেই খোঁজ করেন তাঁকে। তিনি জানতে চান, সোহেল কোথায় জবাব দিতে এগিয়ে যান। ছানোয়ার হোসেন বলেন, তিনি জরুরি কাজে টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করতে গেছেন। তাই আমাকে দায়িত্ব দিয়ে গেছেন।সোহেলের বুদ্ধিতে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যান ওবায়দুল কাদের। কারণ, টুঙ্গিপাড়ায় মাজার জিয়ারত করতে যাওয়ার কারণে সোহেলকে তিনি ধমক দিতে পারছেন না। আবার আমন্ত্রণ জানিয়ে উপস্থিত না থাকাটাও সহ্য করা কঠিন ।স্বাভাবিকভাবেই মেজাজ তিরিক্ষি হতে থাকে কাদেরের। এর উপর বাড়তি মাত্রা যোগ করেন ছানোয়ার।
কাদের আগমন উপলক্ষে নেতাকর্মীদের নিয়ে বিরামহীনভাবে স্লোগান চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। এই অবস্থার মধ্যে মেজাজ হারিয়ে ফেলেন কাদের। লোকজনের সামনে কষে চড় থাপ্পড় মেরে দেন এমপি ছানোয়ারের গালে। এসময় কয়েকটা কিল ঘুষিও দেন। এরপর সেখানে আর বিন্দুমাত্র অবস্থান না করে ঢাকায় রওনা হন ওবায়দুল কাদের। কিন্তু এই ঘটনায় ভীমরি খেয়ে যান উপস্থিত নেতাকর্মীরা। এমপির চড় খাওয়া দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে পড়েন তাঁরা৷ তবে কেন ওবায়দুল কাদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় চলে গিয়েছিলেন সোহেল হাজারী?সেই প্রশ্ন থেকেই গেছে।
Leave a Reply