free tracking

ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃত হয়েছে বলে যা জানালেন জামায়াত আমির!

শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান অভিযোগ করেন, ভাষা আন্দোলন ইতিহাস বিকৃতির শিকার হয়েছে। তিনি বলেন, অধ্যাপক গোলাম আজমের ভূমিকা ইতিহাসে যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে না। বিচারপতি আব্দুর রহমান চৌধুরী, যিনি ভাষা আন্দোলনের মূল খসড়া প্রস্তুত করেছিলেন, তাকেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।

শফিকুর রহমান প্রশ্ন তোলেন, “তমুদ্দিন মজলিস, যারা ভাষা আন্দোলনের সূচনা করেছিল, তারা ইতিহাস থেকে বিলীন কেন?” তিনি দাবি করেন, প্রকৃত ইতিহাস তুলে না ধরলে জাতি বারবার বিকৃত তথ্যের শিকার হবে এবং ভবিষ্যতে বীরদের স্বীকৃতি না দিলে সুবিধাবাদীদের দৌরাত্ম্য বাড়বে।

জামায়াত আমির বলেন, “বিগত সরকার শুধু নির্দিষ্ট গোষ্ঠী ছাড়া দেশের প্রায় সব নাগরিকের ওপর জুলুম করেছে। আর এই নির্যাতনের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও।” তিনি উল্লেখ করেন, ২০১১ সালে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা ২০২৪ সালে তাদের নতুন প্রজন্মের হাতে এসে পরিপূর্ণ রূপ লাভ করেছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা সবাই মজলুম ছিলাম। এই অধ্যায় শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশে আর কারও ওপর জুলুম সহ্য করা হবে না। বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলতে দেওয়া যাবে না।”
শফিকুর রহমান অভিযোগ করেন, “আমাদের অনেক দায়িত্বশীল নেতাকে মিথ্যা অপবাদের মাধ্যমে বিচারের নামে ক্যাঙ্গারু কোর্ট বসিয়ে জুডিশিয়ালি হত্যা করা হয়েছে। কেউ কি তাদের জীবন ফিরিয়ে দিতে পারবে?”

তিনি বলেন, “আজ ছয় মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে, তবু আমাদের এক নেতা এখনো বন্দি অবস্থায় আছেন। আমরা এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছি, কিছু বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হলেও, অন্যদের মুক্তি না দেওয়া অন্যায়।”
জামায়াত আমির ঘোষণা দেন, “আমার এখন বাইরে থাকার কোনো অর্থ নেই। আমি নিজেও জেলে যেতে চাই। যদি সরকার আমাকে জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা না করে, তাহলে আমি স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করব।”

তিনি বলেন, “আমাকে একা জেলে পাঠানো যাবে না, আমার লাখো কর্মী আমার পাশে থাকবে। তবে আমি চাই, আমার সহকর্মীরা বাইরে থেকে লড়াই চালিয়ে যান।”
তিনি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করে বলেন, “ফ্যাসিস্ট সরকার অতীতেও আমাকে দফায় দফায় বন্দি করেছে, এবারও করতে পারে। তবে জাতি দেখুক, স্বৈরাচারের পতনের পরও একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে কারাবন্দি করা হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। আমরা বিশৃঙ্খলা চাই না, তবে আমাদের দাবার গুটি বানানো যাবে না।”
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমিরের এই বক্তব্য নতুন করে রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি করতে পারে। তিনি ভাষা আন্দোলনের বিকৃতি, রাজনৈতিক দমন-পীড়ন ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছেন, তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দেবে। তবে সরকার এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

সূত্র: https://tinyurl.com/3kbwrapu

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *