বাংলাদেশে দীর্ঘ ৪০ বছর পর প্রথমবারের মতো ১,৫১৯টি নিবন্ধিত ইবতেদায়ী মাদ্রাসা এবং তাদের শিক্ষকরা এমপিওভুক্তির সুযোগ পাচ্ছেন। সরকারের এই উদ্যোগের ফলে, আগামী মে মাস থেকে এসব শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদান শুরু হতে পারে, যা মাদ্রাসা শিক্ষকদের জন্য একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তন।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে, যা এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে সহায়তা করবে। এটি স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো ইবতেদায়ী মাদ্রাসাকে এমপিওভুক্ত করার উদ্যোগ, যা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হতে যাচ্ছে।
পূর্বে বেশ কয়েকবার ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের প্রস্তাব উঠলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। তবে, ২৮ জানুয়ারি শাহবাগে ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের প্রতি সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, ১,৫১৯টি স্বতন্ত্র মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে। পুলিশের জলকামান ও লাঠিচার্জের পরও শিক্ষকেরা তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছিলেন, যা সরকারের মনোযোগ আকর্ষণ করে।
বর্তমানে দেশে ৬,৯৯৭টি কোডভুক্ত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা রয়েছে, তবে প্রথম পর্যায়ে ১,৫১৯টি মাদ্রাসা এমপিওভুক্ত হবে, যার ফলে প্রায় ৬,০০০ শিক্ষক এমপিওভুক্ত হতে পারবেন। এই ধাপে প্রতিটি মাদ্রাসার জন্য একজন প্রধান শিক্ষক এবং চারজন সহকারী শিক্ষক এমপিওভুক্ত হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, শিগগিরই প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ে সারসংক্ষেপ পাঠানো হবে এবং মে মাসের মধ্যে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এদিকে, শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ মন্তব্য করেছেন, প্রাথমিক এবং ইবতেদায়ী স্তরের শিক্ষায় একই ধরনের পাঠদান হলেও, বেতন-ভাতার মধ্যে বৈষম্য ছিল। সরকারের এই উদ্যোগের ফলে সেই বৈষম্য দূর হবে এবং ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকদের যথাযোগ্য সম্মান ও মর্যাদা প্রদান করা হবে।
এ প্রক্রিয়া ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের জন্য এক নতুন সূচনা করবে, যা তাদের পেশাগত মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে সহায়ক হবে এবং দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
Leave a Reply