দুবাইয়ের আকাশে উত্তেজনার ছায়া, মরুর বুকে ঝড় তোলার অপেক্ষায় ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের টিকিট কার ভাগ্যে জুটবে, সেটাই এখন কোটি টাকার প্রশ্ন! একদিকে ভারত, ক্রিকেটীয় পরিসংখ্যানের এক মহাকাব্যিক চরিত্র, অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া, শক্তি ও শৌর্যের প্রতিচ্ছবি। মাঠের লড়াই শুরু হওয়ার আগে চোখ রাখা যাক পরিসংখ্যানের আয়নায়—কোন দল আসলে এগিয়ে?
ভারত-অস্ট্রেলিয়া: পরিসংখ্যানের পাল্লা কার পক্ষে?
একদিনের আন্তর্জাতিক (ওডিআই) ফরম্যাটে দুই দল একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে ১৫১ বার। ইতিহাস বলছে, ৮৪ ম্যাচ জিতে এগিয়ে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, অন্যদিকে ভারতের জয় ৫৭ ম্যাচে। ১০টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। তবে পরিসংখ্যানই কি সব?
২০০৯ সালের পর আবারও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মঞ্চে দেখা হচ্ছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর। ১৬ বছরের অপেক্ষা শেষ, আবারও লড়াই, আবারও উত্তেজনা।
ব্যাটিং পরিসংখ্যান: রান পাহাড় গড়ার গল্প
দলীয় সর্বোচ্চ স্কোর
ভারত: ৩৯৯/৫ (ইন্দোর, ২০২৩)
অস্ট্রেলিয়া: ৩৮৯/৪ (সিডনি, ২০২০)
দলীয় সর্বনিম্ন স্কোর
ভারত: ৬৩ (সিডনি, ১৯৮১)
অস্ট্রেলিয়া: ১০১ (পার্থ, ১৯৯১)
ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস
ভারত: ২০৯ – রোহিত শর্মা (বেঙ্গালুরু, ২০১৩)
অস্ট্রেলিয়া: ১৫৬ – জর্জ বেইলি (নাগপুর, ২০১৩)
শচীন টেন্ডুলকারের ব্যাট কথা বলেছে ৩০৭৭ রানের ভাষায়, আর রিকি পন্টিংয়ের ব্যাটে উঠেছে ২১৬৪ রান। রোহিত শর্মার ছক্কার বন্যা—৮৭টি! গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ঝুলিতে মাত্র ৪৪। তাহলে কি ছক্কা উৎসবেও ভারত এগিয়ে?
বোলিং পরিসংখ্যান: কার হাতে ম্যাচের লাগাম?
সবচেয়ে বেশি উইকেট
ভারত: ৪৫ – কপিল দেব
অস্ট্রেলিয়া: ৫৫ – ব্রেট লি
সেরা বোলিং ফিগার
ভারত: ৬/২৭ – মুরালি কার্তিক (মুম্বাই, ২০০৭)
অস্ট্রেলিয়া: ৬/৩৯ – কেন ম্যাকলে (নটিংহাম, ১৯৮৩)
উইকেটকিপারদের দ্বৈরথেও উত্তেজনা কম নয়—এমএস ধোনির ৬২ ডিসমিসাল, অ্যাডাম গিলক্রিস্টের ৭৯। ম্যাচের মোড় ঘোরানো কোন কিপারের গ্লাভসে জমা হবে বেশি শিকার?
আজকের লড়াই: পরিসংখ্যান বনাম বাস্তবতা
পরিসংখ্যান হয়তো অস্ট্রেলিয়াকে সামান্য এগিয়ে রাখে, কিন্তু ক্রিকেট তো শুধুই সংখ্যার খেলা নয়। এটি লড়াইয়ের, মনোবলের, সাহসের খেলা। রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি যখন ক্রিজে থাকবেন, কিংবা জাসপ্রিত বুমরাহ যখন নতুন বলে দৌড় শুরু করবেন—তখন কি পরিসংখ্যান বদলে যাবে না?
অন্যদিকে, ওয়ার্নার-স্মিথদের ব্যাট কথা বললে, কামিন্স-স্টার্কদের আগুনে বোলিংয়ে যদি ভারতীয় ব্যাটিং ধসে পড়ে, তাহলে জয় কে ছিনিয়ে নেবে?
দুবাইয়ের সন্ধ্যা সাক্ষী হবে এক মহারণের। শুধু এক ম্যাচের নয়, ইতিহাস বদলে দেওয়ার লড়াই। আজকের রাত নতুন নায়ক জন্ম দেবে, হয়তো নতুন চ্যাম্পিয়নও। এখন অপেক্ষা শুধু প্রথম বল পড়ার!
Leave a Reply