free tracking

নতুন তদন্তে ফাঁস হলো ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গোপন দুর্নীতি!

নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) দুর্নীতির অঘোষিত আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এই সময়কালে ইফার মৌলিক কাজ থেকে সরে গিয়ে অনৈসলামিক কার্যক্রম, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং দলীয়করণের চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। সাবেক ডিজি সামীম মোহাম্মদ আফজালের ১১ বছরের সময়কালে, এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেক ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

প্রতিষ্ঠানে চাকরি এবং পদায়নের ক্ষেত্রে দুর্নীতি, জালিয়াতি এবং দলীয় তৎপরতার মধ্যে এটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার সঙ্গে ইফার দুর্নীতির চিত্র অনেকটা খোলাসা হয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত অডিট রিপোর্টে ইফায় প্রায় ৯০০ কোটি টাকার অপব্যয় এবং অবৈধ খরচের তথ্য উঠে এসেছে।

ইফার পরিচালকদের মধ্যে আ. ছালাম খান, যিনি মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্বে আছেন, তিনি এই অনিয়মের তদন্তের জন্য সাবেক বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে, বর্তমান পরিস্থিতি অনুসারে, কিছু কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়েছে, কিন্তু একেবারে কার্যকর ব্যবস্থা এখনও নেওয়া হয়নি।

ইফা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও সেখানে বিভিন্ন অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে, যার মধ্যে সঙ্গীত ও নাচের আয়োজন, মার্কিন তরুণীদের ব্যালে নৃত্য, এবং ইসলামের মৌলিক শিক্ষার বিরুদ্ধে কর্মকাণ্ড অন্তর্ভুক্ত ছিল। সামীম মোহাম্মদ আফজালের সময় এসব কার্যক্রম নিয়মিত হয়েছিল।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি, যা ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তা বর্তমানে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে। ধর্মীয় শিক্ষা এবং সামাজিক উন্নয়নকেন্দ্রিত প্রশিক্ষণের পরিবর্তে এখানে বিভিন্ন দলীয় কার্যক্রম চালানো হয়েছে।

এছাড়া, মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পেও দলীয় ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে, যেখানে শিক্ষকরা আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলীয় সভা-সমাবেশে অংশ নিতেন, অথচ কার্যকর পাঠদান করতেন না।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রকাশনা বিভাগে সামীম আফজাল নিজের নামে ২৫টির বেশি বই প্রকাশ করেছিলেন, যেখানে লাখ লাখ টাকা অপচয় হয়েছিল। ইসলামি বিশ্বকোষের কোনো নতুন খণ্ডও প্রকাশ হয়নি এবং গবেষণামূলক বইগুলোর পরিমাণ খুবই কম ছিল।

– জালিয়াতি এবং চাকরি: ইফায় অনেক কর্মকর্তা চাকরি পেয়েছেন অবৈধ সনদ ও জালিয়াতির মাধ্যমে।

– বায়তুল মোকাররমে দুর্নীতি: বায়তুল মোকাররমে দোকান বরাদ্দ ও হস্তান্তরে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

– ফারমার্স ব্যাংকে দুর্নীতি: বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া ফারমার্স ব্যাংকে টাকার স্থায়ী আমানত রাখা হয়েছিল, যা বিধিবহির্ভূত ছিল।

এ সকল অনিয়ম ও দুর্নীতির ফলে সরকার অনেক অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মৌলিক লক্ষ্য অর্জন হতে পারেনি। বর্তমানে এই বিষয়গুলো তদন্তাধীন রয়েছে এবং ভবিষ্যতে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *