free tracking

একই দিনে পালিত হবে লাইলাতুল কদর ও জুমাতুল বিদা!

এ বছর বাংলাদেশের মুসলমানরা এক অনন্য ধর্মীয় পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। শবে কদর (লাইলাতুল কদর) এবং পবিত্র রমজানের শেষ জুমা তথা জুমাতুল বিদা একই দিনে পড়েছে। অর্থাৎ, আগামী ২৮ মার্চ শুক্রবার মুসল্লিরা একইসঙ্গে জুমাতুল বিদার নামাজ আদায় করবেন এবং ২৭তম রোজার রাতকে শবে কদর হিসেবে পালন করবেন।

কেন লাইলাতুল কদর এত গুরুত্বপূর্ণ?লাইলাতুল কদর হল পবিত্র কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার রাত, যা হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও শ্রেষ্ঠ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে (সূরা আল-কদর, আয়াত ৩)। ইসলামী পরিভাষায়, রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোর মধ্যে লাইলাতুল কদরকে খোঁজার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও অনেকেই ২৭তম রমজানকে শবে কদর হিসেবে পালন করেন, তবে হাদিস অনুসারে এটি ২১, ২৩, ২৫, ২৭ কিংবা ২৯তম রাতেও হতে পারে।

একই দিনে জুমাতুল বিদা, বাড়তি মাহাত্ম্যরমজানের শেষ জুমাকে ‘জুমাতুল বিদা’ বলা হয়, যা মুসলিমদের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও ইসলামিক শরিয়তে জুমাতুল বিদার জন্য আলাদা কোনো বিধান নেই, তবুও অনেকে এই দিনকে ইবাদতের মাধ্যমে বিশেষভাবে পালন করে থাকেন।

এ বছর যেহেতু শবে কদর ও জুমাতুল বিদা একই দিনে পড়েছে, তাই মসজিদগুলোতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নামবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সারারাত ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন থাকার পর মুসল্লিরা পরদিন শুক্রবার জুমাতুল বিদার নামাজ আদায় করবেন।

ইসলামের দৃষ্টিতে করণীয়ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী, রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করা এবং বেশি বেশি ইবাদত করা উত্তম। রাসুল (সা.) নিজে শেষ দশকে মসজিদে ইতিকাফ করতেন এবং সাহাবাদেরও উৎসাহিত করতেন (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০২০)।

এদিনের করণীয়:✅ রাতে নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত ও জিকির করা✅ আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া ও দোয়া করা✅ জুমাতুল বিদার নামাজ আদায়ে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া✅ গরীব-দুঃখীদের সাহায্য করা

অনাকাঙ্ক্ষিত বিদআত থেকে সাবধানইসলামে শবে কদর ও জুমাতুল বিদা অত্যন্ত পবিত্র হলেও, কিছু ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে। যেমন, অনেকে মনে করেন যে, এই রাতে নির্দিষ্ট সংখ্যক রাকাত নামাজ পড়তে হবে বা বিশেষ কোনো দোয়া বাধ্যতামূলক। অথচ কুরআন ও হাদিসে এ বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম নেই।

সারাদেশে প্রস্তুতিদেশের বিভিন্ন মসজিদ, বিশেষ করে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, শোলাকিয়া ঈদগাহ ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় মসজিদে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে, যাতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা নির্বিঘ্নে ইবাদত করতে পারেন।

এ বছর একইসঙ্গে লাইলাতুল কদর ও জুমাতুল বিদার সম্মিলন মুসলমানদের জন্য একটি বিরল সুযোগ। এই বিশেষ দিনে সবাই যেন পরিশুদ্ধ মনে ইবাদতে মগ্ন হতে পারে, সেই প্রত্যাশা রইল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *