চট্টগ্রামে ভূমিকম্পের ঝুঁকি নিয়ে বিশ্লেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন। তাঁদের মতে, শহরের দুই থেকে আড়াই লাখ ভবন ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অপরিকল্পিত নগরায়ন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্মাণ এবং নিয়মনীতি উপেক্ষা করেই ভবন তৈরি করা হচ্ছে, যা ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। তবে, ভূমিকম্প বা বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারি সংস্থাগুলোর প্রস্তুতি নেই বললেই চলে।
চট্টগ্রাম বন্দরনগরীর ভূপৃষ্ঠের নিচে থাকা টেকট্রনিক প্লেটের উপর দাঁড়িয়ে আছে, যা ভূমিকম্পের ঝুঁকিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ৮.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হলে চট্টগ্রাম শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা যেমন বন্দর, তেল শোধনাগার, শিল্পাঞ্চল এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে শুধু চট্টগ্রামের, বরং দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ধাক্কা আসবে।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানান, ভূমিকম্প বা বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর উদ্ধার কাজের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির অভাব রয়েছে। অপরিকল্পিত নগরায়নের কারণে দুর্ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছানোও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা আরও বলেন, শহরের মধ্যে সহজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়া সম্ভব হবে না, এবং ইউটিলিটি সার্ভিসগুলোও বিধ্বস্ত হয়ে যাবে।
এছাড়া, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এবং সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব হলো ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করা এবং সেগুলোর অপসারণ করা, তবে গত কয়েক বছর ধরে এমন কোনো উদ্যোগই নেওয়া হয়নি। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গত কয়েক বছরের তালিকা অনুযায়ী, শহরে মাত্র ৯৪টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন রয়েছে, কিন্তু এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
অপরিকল্পিত নগরায়ন, অব্যবস্থাপনা এবং দুর্ঘটনা মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির অভাবে চট্টগ্রামের নিরাপত্তা নিয়ে অনেক উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
Leave a Reply