সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে আর্জেন্টিনার দাপট দেখেছে গোটা বিশ্ব। কোপা আমেরিকা ও বিশ্বকাপ জয়ের পর আকাশী-সাদারা জায়গা করে নিয়েছে র্যাংকিংয়ের শীর্ষে। তবে জাতীয় দলের এই শিরোপা জয় যে পুরো দেশের ফুটবল শক্তির প্রতিচ্ছবি নয়, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ক্লাব বিশ্বকাপ ২০২৫।
ব্রাজিল-৪, আর্জেন্টিনা-১
পনেরই জুন থেকে শুরু হতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত ক্লাব বিশ্বকাপ। ৩২ দলের এই আসরে ব্রাজিল থেকে অংশ নিচ্ছে মোট চারটি ক্লাব। অপরদিকে, বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা থেকে সুযোগ পেয়েছে মাত্র একটি ক্লাব।
এটাই প্রমাণ করে দেয়, শিরোপা জয়ের বাইরেও ফুটবলের পরিকাঠামো কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ক্লাব ভিত্তিক শক্তিমত্তায় ব্রাজিল এখনো আর্জেন্টিনার থেকে অনেক এগিয়ে।
খেলোয়াড় উৎপাদনেও ব্রাজিলের শ্রেষ্ঠত্ব
শুধু ক্লাব সংখ্যা নয়, খেলোয়াড় উৎপাদনের দিকেও স্পষ্ট ফারাক দেখা গেছে। এবারের ক্লাব বিশ্বকাপে বিভিন্ন দলে ব্রাজিলের খেলোয়াড় আছেন মোট ১৪২ জন। অন্যদিকে, আর্জেন্টিনার খেলোয়াড় সংখ্যা ১০৪ জন।
প্রায় ৪০ জনের এই ব্যবধান দেখিয়ে দেয়, কেবল সাফল্যের গল্প নয়, ব্রাজিল ভবিষ্যতের ফুটবলার তৈরি করায় আরও বেশি সফল। একটি বা দুইটি নয়, ত্রিশের বেশি খেলোয়াড়ের এমন ব্যবধান একটি দেশের ফুটবল ব্যবস্থাপনার গভীরতাই তুলে ধরে।
শিরোপার বাইরেও ফুটবলের মানে আছে অবকাঠামো ও ধারাবাহিকতা
ফুটবল কেবল ট্রফি জেতার খেলা নয়, এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। যেখানে ক্লাব একাডেমি, কোচিং, খেলোয়াড় প্রস্তুতি ও অবকাঠামোর অবদান অপরিসীম। ব্রাজিল বেশ কিছু বছর ধরে জাতীয় পর্যায়ে শিরোপার স্বাদ না পেলেও তাদের ক্লাব কাঠামো এখনো বিশ্বের অন্যতম সেরা।
ভিনিসিয়াস জুনিয়র, রাফিনিয়া, রদ্রিগো—এইসব তরুণ প্রতিভা ইউরোপিয়ান লিগে নিয়মিত পারফর্ম করছেন, যা ব্রাজিলের খেলোয়াড় তৈরি প্রক্রিয়ার সাফল্যেরই প্রমাণ।
জাতীয় দলের জয় মানেই সার্বিক সাফল্য নয়
আর্জেন্টিনার জাতীয় দল এখন শীর্ষ ফর্মে। কিন্তু তা ক্লাব ফুটবলের গুণগত মানকেও প্রতিনিধিত্ব করে না। ক্লাব বিশ্বকাপে একমাত্র ক্লাব দিয়ে অংশগ্রহণ এবং খেলোয়াড় সংখ্যায় পিছিয়ে থাকা এটি স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দেয়।
অন্যদিকে, ব্রাজিলের জাতীয় দল হয়তো বড় কোনো ট্রফি জিততে পারেনি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, কিন্তু তারা ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত—বেসিক ফুটবলের কাঠামোকে অক্ষুণ্ণ রেখেই।
“হাতি মরলেও লাখ টাকা”—ব্রাজিল ফুটবলের ক্ষেত্রে এই কথাটি যেন আরও একবার প্রমাণিত হলো। বিশ্বশিরোপা ছাড়াই ব্রাজিল দেখিয়ে দিল, ক্লাব ফুটবল, খেলোয়াড় উৎপাদন ও অবকাঠামোয় তারা এখনো শীর্ষে। ক্লাব বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ ও পরিসংখ্যানই বলে দেয়—ব্রাজিল ফুটবল এখনো বিশ্বের শ্রেষ্ঠদের একজন, এবং তারা হারিয়ে দেয়নি, বরং হারিয়ে দিয়েছে আর্জেন্টিনাকেই।
উত্তর (একলাইনে)
ক্লাব বিশ্বকাপে ব্রাজিলের কয়টি ক্লাব খেলছে? — চারটি ক্লাব,
আর্জেন্টিনার ক্লাব কয়টি ক্লাব বিশ্বকাপে খেলছে? — মাত্র একটি,
সবচেয়ে বেশি খেলোয়াড় কোন দেশের? — ব্রাজিল (১৪২ জন),
ফুটবল অবকাঠামোয় কে এগিয়ে? — ব্রাজিল,
জাতীয় দলে ভালো করলে কি ক্লাব ফুটবলেও এগিয়ে থাকে? — সবসময় নয়,
ব্রাজিল কি জাতীয় সাফল্য ছাড়াও ফুটবল দাপট দেখাচ্ছে? — হ্যাঁ, ক্লাব ও খেলোয়াড় তৈরিতে তারা শীর্ষে।
Leave a Reply