আপনার সুস্বাস্থ্য অনেকাংশেই নির্ভর করে আপনি কী খাচ্ছেন তার উপর। খাদ্যাভ্যাস শুধু সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্যই নয়, কিডনির সুস্থতার ক্ষেত্রেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য বের করে, ইলেকট্রোলাইট ব্যালান্স করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং গুরুত্বপূর্ণ হরমোন উৎপাদন করে। কিন্তু যদি আপনার ডায়েট ঠিক না থাকে, তাহলে কিডনিই প্রথম ধাক্কা খায়।
কিছু নির্দিষ্ট খাবার অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সেগুলো এড়িয়ে চললে কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখা সম্ভব। নিচে এমন পাঁচটি খাবারের তালিকা দেওয়া হলো, যেগুলো কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে:
১. সোডা (ফিজি পানীয়):
যারা নিয়মিত কোল্ড ড্রিংক পান করেন, তাদের এখনই এই অভ্যাস বদলানো জরুরি। সাধারণ ও ডায়েট— উভয় ধরনের সোডাতেই ফসফরিক অ্যাসিড, কৃত্রিম চিনি এবং অতিরিক্ত চিনি থাকে। এসব উপাদান কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। সোডা ক্যালরি-সমৃদ্ধ হওয়ায় ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণায় দেখা গেছে, সোডা হাড় ক্ষয়, কিডনি রোগ, মেটাবলিক সিনড্রোম এবং দাঁতের সমস্যার কারণ হতে পারে। এর বদলে পানি, হারবাল চা বা নারকেল পানি বেছে নিন।
২. প্রসেসড মাংস (ডেলি মিট):
বেকন, সসেজ, হ্যামসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত মাংসে উচ্চমাত্রার সোডিয়াম এবং সংরক্ষণকারী রাসায়নিক (নাইট্রেট, ফসফেট) থাকে। অতিরিক্ত সোডিয়াম উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম কারণ, যা কিডনি ক্ষতির প্রধান ঝুঁকি। এই মাংসে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়, যা কিডনি রোগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত।
৩. মাখন:
মাখন খাওয়ার স্বাদ যতই ভালো লাগুক, এটি প্রাণিজ চর্বি দিয়ে তৈরি এবং এতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও কোলেস্টেরল বেশি থাকে। এর ফলে স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে, যা আবার কিডনি ক্ষতির দিকে নিয়ে যায়। ধীরে ধীরে এই চর্বি রক্তনালিতে জমা হয়ে কিডনির রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে। এর পরিবর্তে অলিভ অয়েল, অ্যাভোকাডো বা প্লান্ট-ভিত্তিক স্প্রেড ব্যবহার করুন।
৪. মেয়োনেজ:
ক্রিমি ও স্বাদের জন্য প্রিয় হলেও মেয়োনেজ কিডনির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এটি স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ক্যালোরিতে ভরপুর। মাত্র এক চামচ মেয়োনেজে প্রায় ১০৩ ক্যালোরি থাকে! এটি ওজন বাড়ায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে কিডনির ওপর প্রভাব ফেলে। এমনকি কম ফ্যাট বা ফ্যাট-ফ্রি মেয়োনেজেও অতিরিক্ত সোডিয়াম ও চিনি থাকে।
৫. ফ্রোজেন রেডি মিলস:
সহজভাবে খাওয়া গেলেও বাজারে বিক্রি হওয়া বেশিরভাগ ফ্রোজেন খাবারেই প্রিজারভেটিভ, সোডিয়াম এবং ক্ষতিকর চর্বি থাকে। উচ্চ সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়ায় এবং কিডনিকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে বাধ্য করে। তাই এসব খাবারের পরিবর্তে বাসায় তৈরি তাজা ও স্বাস্থ্যকর খাবার খান।
Leave a Reply