free tracking

৮-০ গেলে শেষ হলো বাংলাদেশের ফুটবল ম্যাচ!

মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে আজ যেন গল্প লিখছে লাল-সবুজের মেয়েরা। মাঠজুড়ে তারা ছড়িয়ে দিয়েছে এক স্বপ্নের ছায়া, যার রঙ লাল, যার রঙ সবুজ। ফিফা র‍্যাংকিংয়ে বাহরাইনের চেয়ে ৩৬ ধাপ পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ প্রথমার্ধেই পাঁচ-পাঁচটি গোল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে—এই দল শুধু খেলতে আসেনি, জিততে এসেছে।

ম্যাচের শুরু থেকেই যেন এক তরুণী দলে আগুন। প্রতিপক্ষকে সময়ই দিল না নিজের ছায়া খুঁজে নিতে। বল পজিশন, গতি, পাসিং, আক্রমণ—সবখানে ছন্দে নেচেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। আর সেই নাচেই তছনছ হয়ে গেছে বাহরাইনের প্রতিরক্ষা।

শামসুন্নাহার: শুরুটা ছিল এক কবিতা

১০ মিনিটেই গল্পের প্রথম পঙক্তি লিখলেন শামসুন্নাহার। নিজেদের অর্ধ থেকে আসা লম্বা বল দৌড়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে প্রবেশ করলেন বক্সে। বাহরাইনের গোলরক্ষক বেরিয়ে আসতেই মাথার উপর দিয়ে বল জালে—এক ঝলকে যেন বিশ্বমানের ফিনিশিং! স্টেডিয়ামের বাতাসেও তখন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ধ্বনি।

ক্লাসিকাল দ্বিতীয় গোল, চোখ জুড়ানো ফুটবল

মাত্র পাঁচ মিনিট পরই আসে দ্বিতীয় গোল। বাঁ দিক থেকে ভেসে আসা বল রিসিভ করে ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে জোরালো কোনাকুনি শটে বল পাঠান জালে। গ্যালারিতে তখন হাততালির শব্দে ঢেউ উঠছে। দুই গোলেই বোঝা যাচ্ছিল—এই ম্যাচে বাংলাদেশের মঞ্চটাই বড়।

কোহাতির গুলির মতো শট, তৃতীয় আঘাত

তহুরার হেড গোলটি অফসাইডে বাতিল হলেও তা হতাশ করেনি বাংলাদেশকে। ৪২তম মিনিটে কর্নার থেকে জটলার মধ্যে ছিটকে আসা বল পেয়ে জোরালো শটে গোল করলেন কোহাতি কিসকু। ৩-০ গোলের লিড, আর তখনও প্রথমার্ধ বাকি!

‘তহুরা টাইম’ শুরু ইনজুরি সময়েই

যখন মনে হচ্ছিল প্রথমার্ধ এই ৩ গোলেই শেষ হবে, তখন রং ছড়াতে আসেন তহুরা খাতুন। ইনজুরি সময়ের শুরুতেই গোল করে ব্যবধান বাড়ান তিনি। কিন্তু তাতেই থেমে থাকেননি! তিন মিনিটের ব্যবধানে আরও একটি গোল করে নিজের নাম লেখান জোড়া গোলদাতাদের তালিকায়। বাহরাইনের ডিফেন্স তখন যেন স্থবির, আর তহুরা যেন বাতাস কেটে এগিয়ে চলা এক ক্ষিপ্র ধারা।

বিরতিতে ৫-০ লিড, দ্বিতীয়ার্ধ বাকি এখনও!

বাংলাদেশের মেয়েরা যখন ড্রেসিংরুমে ফিরছেন, তখন স্কোরবোর্ড বলছে ৫-০। পুরো ম্যাচ তখনও শেষ হয়নি, তবে প্রথমার্ধেই নিজেদের জাত চিনিয়ে দিয়েছেন তারা।

ম্যাচের চূড়ান্ত ফলাফল যাই হোক, এতটুকু স্পষ্ট—বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল আজ নতুন এক অধ্যায়ের প্রথম বাক্য লিখে দিয়েছে। সেই বাক্যে সাহস আছে, শ্রদ্ধা আছে, আর আছে জয়ের ক্ষুধা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *