অনেক সময় শরীর দেখিয়ে দেয় ভেতরের অনেক অদেখা বিপদের ইঙ্গিত। কোলেস্টেরল তেমনই এক নীরব ঘাতক, যা বাড়তে শুরু করলে তাৎক্ষণিক কোনো বড় উপসর্গ দেখা যায় না। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এটি হৃদরোগ, স্ট্রোক, হাইপারটেনশনসহ বিভিন্ন জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
যেহেতু কোলেস্টেরল ধীরে ধীরে শরীরে জমে ক্ষতি করে, তাই আগে থেকেই সতর্ক হওয়া জরুরি। বিশেষ করে যারা তেল-ঝাল-পোড়া খাবার বেশি খান, অনিয়মিত জীবনযাপন করেন বা পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে—তাদের নিয়মিত নজর রাখা উচিত।
চলুন জেনে নিই রক্তে কোলেস্টেরল বাড়ার ৫টি সতর্কতামূলক সংকেত
১. ঘাড় বা চোখের চারপাশে চর্বি জমা দেখা দেওয়া
আপনার চোখের পাতার উপরের অংশে বা চারপাশে হলদে রঙের ছোট চর্বির মতো দাগ দেখা দিলে তা হতে পারে ‘জ্যানথেলাজমা’—যা উচ্চ কোলেস্টেরলের ইঙ্গিত দিতে পারে।
২. পায়ে বা হাতে ঝিম ঝিম ভাব, ব্যথা বা অবশতা
শরীরে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল রক্তনালিকে সংকুচিত করে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত করে। ফলে বিশেষ করে পায়ের দিকে অদ্ভুত ঝিমুনি বা টান ধরার অনুভূতি দেখা দিতে পারে।
৩. বুক ধড়ফড় করা বা হালকা ব্যথা অনুভব করা
বাড়তি কোলেস্টেরল ধমনিতে চর্বি জমিয়ে হৃদপিণ্ডে রক্তপ্রবাহ কমিয়ে দেয়। যার ফলে হালকা বুক ধড়ফড় করা, ব্যথা বা চাপ লাগা শুরু হতে পারে।
৪. ক্লান্তি বা মাথা ঘোরা অনুভব করা
যথাযথ রক্তপ্রবাহ না থাকলে মস্তিষ্কেও পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছায় না। এতে মাথা ঘোরা, ঝিম ঝিম ভাব কিংবা দুর্বলতা অনুভব হতে পারে।
৫. হাতের নখে বা ত্বকে রঙের পরিবর্তন
রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হলে হাত-পায়ের নখের নিচে হালকা নীলচে রঙ দেখা দিতে পারে। এছাড়াও ত্বক মলিন বা বিবর্ণ দেখাতে পারে, যা সতর্ক হওয়ার সংকেত।
কী করবেন?
- বছরে অন্তত একবার লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করান
- চর্বিজাত খাবার কমিয়ে সবজি ও ফাইবারযুক্ত খাবার খান
- প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন
- ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন ও পর্যাপ্ত পানি পান করুন
মনে রাখবেন:
“কোলেস্টেরল বাড়ে নীরবে, ক্ষতি করে জোরে!” তাই শরীরের ছোট পরিবর্তনগুলোকেও গুরুত্ব দিন। সময়মতো চিহ্নিত করতে পারলে জীবন বাঁচানো সম্ভব।
Leave a Reply