ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নে মাদরাসাছাত্রী মাইমুনা আক্তার ময়না (১১) হত্যা মামলায় মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় স্থানীয় আলেম সমাজ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
গত ৬ জুলাই ময়না নিখোঁজ হওয়ার পরদিন শাহবাজপুর গ্রামের একটি মসজিদের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে তার বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সামিউল আলম শুনানি শেষে মসজিদের ইমাম হামিদুল ইসলামকে ৩ দিন এবং মুয়াজ্জিন সাইদুল ইসলামকে ২ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন। ওসি বলেন, রিমান্ডে নিয়ে তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা চলছে এবং দ্রুতই হত্যার রহস্য উদঘাটন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান লস্কর তপু জানান, তারা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য কাজ করছেন এবং ময়নার পরিবার যাতে ন্যায়বিচার পায়, সে লক্ষ্যে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ইমাম ও মুয়াজ্জিনকে রিমান্ডে নেওয়ার খবরে স্থানীয় আলেম সমাজে প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। শানে সাহাবা জাতীয় খতীব ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আতিকুল্লাহ বিন রফিক এবং বি-বাড়িয়া জেলা শাখার দায়িত্বশীলরা সরাইল থানা ও নিহত ময়নার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে ঘটনাস্থলে যান।
মাওলানা আতিকুল্লাহ বিন রফিক বলেন, তারা আইনকে সম্মান করেন। তবে কোনো নিরীহ ইমাম-মুয়াজ্জিনকে হয়রানি করা হলে তা বরদাস্ত করা হবে না। তিনি জানান, তদন্ত কর্মকর্তা তাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন যে ডিএনএ ও ময়নাতদন্তে সংশ্লিষ্টতা না পাওয়া গেলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে। এমন পরিস্থিতিতে রিমান্ডে নেওয়ার কারণ স্পষ্ট নয়।
তিনি আরও বলেন, মসজিদের ছাদে লাশ উদ্ধারের কারণে ইমাম-মুয়াজ্জিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যৌক্তিক। তবে শুধু তাদেরই কেন রিমান্ডে নেওয়া হলো, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।
ঘটনার জেরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং শিশুদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেক শিশু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে ভয় পাচ্ছে। এলাকাবাসী দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে।
Leave a Reply