free tracking

২০০ টাকায় ১০ মিনিট আর ৫০০ টাকায় যতক্ষণ খুশি!

নওগাঁ জেলা জজ আদালতের গারদখানায় আসামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কথা বলার সুযোগ পেতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কোর্ট পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে এই লেনদেনের প্রমাণও মিলেছে।

আদালতের গারদখানায় দেখা যায়, বিভিন্ন মামলায় আটক আসামিদের আদালতে হাজির করা হচ্ছে। আত্মীয়স্বজনেরা এসেছেন দেখা করতে, তবে সাক্ষাৎ পেতে গুনতে হচ্ছে টাকা। অভিযোগ অনুযায়ী, ২০০ টাকায় মাত্র ১০ মিনিট কথা বলার সুযোগ, আর ৫০০ টাকা দিলে যতক্ষণ ইচ্ছা কথা বলা, খাবার দেওয়া ও অন্যান্য ‘সুবিধা’ মেলে।

পত্নীতলা থেকে আসা মোস্তফা নামে এক ব্যক্তি জানান, ‘আমার মামাতো ভাইসহ চারজন আটক আছে। দেখা করতে হলে জনপ্রতি আড়াইশ টাকা দিতে হয়। সব মিলে ১ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।’

এক বন্দি মিঠু জানান, ‘পুলিশকে ৫০০ টাকা দিলেই ধূমপান, মোবাইলে কথা বলা, খাবার—সব করা যায়। ফোন আত্মীয়ের কাছ থেকে নিয়ে লুকিয়ে কথা বলি।’

আরেক স্বজন নুরনবী বলেন, ‘প্রথমে ২০০ টাকা দিয়েছিলাম, ১০ মিনিট পর পুলিশ বলে—সময় শেষ। পরে ৩০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়ে মোট ৫০০ দিলে তবেই কথা বলার সময় বাড়ানো হয়।’

গারদের দায়িত্বপ্রাপ্ত এএসআই আলমঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমরা কোনো টাকা নিই না। এসব অভিযোগ মিথ্যা।’ তবে সাংবাদিকদের সামনে টাকা নেওয়ার ঘটনা ঘটলেও তিনি বলেন, ‘ভেতরে বসে কথা বলুন, বিষয়টা মিটমাট করা যাবে।’

নওগাঁ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক এ.কে.এম নূরুল ইসলাম দাবি করেন, ‘বন্দিদের সঙ্গে দেখা করার নিয়ম নেই, তবে মানবিক কারণে শুকনো খাবার ও পানি দেওয়া হয়। প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধ।’

নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বলেন, ‘আসামির সঙ্গে সাক্ষাতে পুলিশের টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নওগাঁ জেলা জজ আদালতের গারদখানায় বন্দিদের সঙ্গে সাক্ষাতের পেছনে অর্থ লেনদেনের যে অভিযোগ উঠেছে, তা ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা ও আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা নিয়ে। এ বিষয়ে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা, এখন সেটিই দেখার বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *