কিডনি ক্যান্সারকে অনেক সময় ‘নিঃশব্দ ঘাতক’ বলা হয়। কারণ এটি মাসের পর মাস, এমনকি বছরের পর বছর ধরে অশনাক্ত অবস্থায় থেকে যায়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি প্রাথমিক পর্যায়েই রোগ ধরা পড়ে, তবে তা জীবন বাঁচাতে পারে এবং রোগ নিরাময়ের সম্ভাবনাও অনেকগুণ বেড়ে যায়। নিচে কিডনির ক্যানসারের পাঁচটি প্রাথমিক লক্ষণ তুলে ধরা হলো। এসব উপসর্গ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। তবে মনে রাখতে হবে, এসব লক্ষণ সব সময় ক্যান্সারের কারণে হয় না; অন্যান্য রোগেও এমন উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
পাশ বা পিঠে স্থায়ী ব্যথা:
অনেকেরই পিঠে ব্যথা হয়, তবে কিডনির ক্যান্সার হলে সাধারণত কোমরের একপাশে বা পিঠের নিচে অবিরাম ব্যথা অনুভূত হয়। এই ব্যথা কোনো ধাক্কা বা আঘাত ছাড়াই শুরু হয় এবং সময়ের সঙ্গে আরও বেড়ে যায়। টিউমার বড় হয়ে আশপাশের টিস্যু ও স্নায়ুকে চাপ দিতে শুরু করলে এ ধরনের ব্যথা হয়।
সাধারণ বয়সজনিত বা শারীরিক পরিশ্রমের কারণে ব্যথা ভেবে অনেকেই অবহেলা করেন। তবে নির্দিষ্ট স্থানে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা থাকলে, বিশেষ করে প্রস্রাবের রঙের পরিবর্তনের সঙ্গে মিল থাকলে, দ্রুত পরীক্ষা করানো উচিত। প্রাথমিক অবস্থায় টিউমার শনাক্ত হলে চিকিৎসার সাফল্যের হার অনেক বেশি।
কিডনি অঞ্চলে গাঁট বা ফোলা:
কিডনিতে টিউমার হলে অনেক সময় পাশের অংশে বা পাঁজরের নিচে শক্ত ধরনের গাঁট বা ফোলা অনুভব করা যায়। অনেক সময় রোগী নিজেই হাত দিয়ে টের পান, আবার অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকরাই নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষায় এটি শনাক্ত করেন।
এ ধরনের ফোলা সব সময় ক্যান্সারের কারণে হয় না; এটি সিস্ট বা অন্যান্য অক্ষতিকর বৃদ্ধিও হতে পারে। তবে যেকোনো দীর্ঘস্থায়ী ফোলাভাবের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি। আল্ট্রাসাউন্ড বা সিটি স্ক্যানের মতো পরীক্ষা করলে বোঝা যায় ফোলাটি ক্যান্সারজনিত কি না।
অবিরাম ক্লান্তি ও শক্তিহীনতা:
কিডনির ক্যান্সারের আরেকটি প্রাথমিক লক্ষণ হলো অস্বাভাবিক ক্লান্তি। টিউমার রক্তকণিকা উৎপাদন ব্যাহত করে এবং শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা অ্যানিমিয়ার কারণ হয়ে যায়। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদি ক্লান্তি, মনোযোগ কমে যাওয়া ও দুর্বলতা বাড়তে থাকে।
শরীরচর্চা বা মানসিক চাপের পর যে ক্লান্তি চলে যায়, ক্যানসারজনিত ক্লান্তি তেমনটি নয়। বরং সময়ের সঙ্গে তা আরও বাড়ে। অনেকেই ব্যস্ত জীবনযাপনকে দায়ী করে এটিকে অবহেলা করেন। কিন্তু ওজন কমে যাওয়া, প্রস্রাবে রক্ত বা পাশের ব্যথার সঙ্গে অবিরাম ক্লান্তি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা জরুরি। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত হলে চিকিৎসার ফল ভালো হয় এবং চিকিৎসার পর জীবনযাত্রার মানও অনেক উন্নত থাকে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
Leave a Reply