free tracking

‘৮-১০ সেকেন্ডেই কাজ শেষ করেছি’, স্বীকারোক্তি দিলেন খু’নি!

কিশোর গ্যাংয়ের সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ওয়াহিদুল হক ওরফে সাব্বির (১৮)। গত ১৬ মে চট্টগ্রাম নগরের হালিশহরে নয়াবাজার এলাকায় চারটি অটোরিকশায় এসে ‘পাইথন’ নামের কিশোর গ্যাংয়ের ২২ জন সদস্য তার ওপর হামলা চালায়। এসময় গ্যাংয়ের নেতা হিসেবে পরিচিত মো. আতাউল (২২) ছুরিকাঘাত করেন ওয়াহিদুলের পেটে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছয় দিন পর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।

নিহত ওয়াহিদুল হক নগরের মুরাদপুরের বাসিন্দা এবং শ্যামলী আইডিয়াল টেকনিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। পুলিশ জানায়, অন্য এক কিশোরকে মারধরের প্রতিশোধ নিতেই পাইথন গ্রুপ কলেজছাত্র ওয়াহিদুলকে টার্গেট করে। তবে ওয়াহিদুল নিজেও ‘বিংগু গ্রুপ’ নামে আরেকটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের পর ওয়াহিদুলের বাবা মো. এসহাক বাদী হয়ে হালিশহর থানায় মামলা করেন।

পুলিশ ইতিমধ্যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে মূল অভিযুক্ত আতাউলকে গত বৃহস্পতিবার রাতে র‍্যাব–পুলিশের যৌথ অভিযানে হালিশহর থেকে ধরা হয়। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ও আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আতাউলের ছুরিকাঘাতের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আতাউল অপরাধ স্বীকার করেছেন।

আতাউল পুলিশের কাছে বলেন, ‘বেশি সময় লাগেনি, ৮-১০ সেকেন্ডেই কাজ শেষ করেছি।’
ওয়াহিদুলের বাবা বলেন, ‘জুমার নামাজ পড়তে বের হওয়ার পর এক বন্ধু তাঁকে ডেকে নিয়ে যায় নয়াবাজার এলাকায়। সেখানেই তাকে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাতে ফেলে দেওয়া হয়।’ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম নগরে কিশোর গ্যাংয়ের সক্রিয়তা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

গত বছরের মার্চে নগর পুলিশের জরিপে উঠে আসে, প্রায় ২০০ কিশোর গ্যাং কার্যক্রম চালাচ্ছে শহরে। এসব গ্যাংয়ে সক্রিয় সদস্যের সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৪০০। গত ৬ বছরে ৫৪৮টি অপরাধে এই গ্যাংগুলো জড়িত ছিল। জরিপে আরও উল্লেখ করা হয়, তাদের পেছনে প্রশ্রয়দাতা হিসেবে অন্তত ৬৪ জন ‘বড় ভাই’ রয়েছেন।
সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যায়, চট্টগ্রামের স্কুলে অনুপস্থিত থাকা শিক্ষার্থীদের ৫৪ শতাংশ অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। স্কুলপড়ুয়া কিশোরেরা ক্লাসের সময়টায় মাদক সেবন ও কেনাবেচা, ছিনতাই, চুরি, সাইবার অপরাধ, অনলাইন জুয়া এবং পর্নোগ্রাফির মতো কর্মকাণ্ডে যুক্ত হচ্ছে। নগরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও সামাজিক অস্থিরতার পেছনে এ প্রবণতাকে প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *