free tracking

গরমে ফ্রিজ ব্যবহারে সতর্কতা, আগুন বা বিস্ফোরণের ঝুঁকি এড়াতে যা করবেন!

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন সঠিক যত্ন না নিলে ফ্রিজও হতে পারে বিপজ্জনক। ছোটখাটো অবহেলা থেকে শর্ট সার্কিট, অতিরিক্ত গরম হয়ে যাওয়া বা বিরল ক্ষেত্রে বিস্ফোরণ পর্যন্ত হতে পারে। ছবি: এআই দিয়ে তৈরি

গরমের মৌসুমে যখন তাপমাত্রা আকাশচুম্বী হয়, তখন ফ্রিজের গুরুত্ব আরো বেড়ে যায়। খাবার তাজা রাখা, পানীয় ঠাণ্ডা রাখা এবং ঘরের স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রাখার জন্য ফ্রিজ অপরিহার্য। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন সঠিক যত্ন না নিলে ফ্রিজও হতে পারে বিপজ্জনক। ছোটখাটো অবহেলা থেকে শর্ট সার্কিট, অতিরিক্ত গরম হয়ে যাওয়া বা বিরল ক্ষেত্রে বিস্ফোরণ পর্যন্ত হতে পারে। গরমে ফ্রিজ ব্যবহার করতে গিয়ে সাধারণ যে ভুলগুলো বিপদের কারণ হতে পারে এবং কিভাবে এগুলো এড়ানো যায় সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন।

১. ভুল তাপমাত্রা সেটিংস ফ্রিজের কম্প্রেসারকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে

অনেকেই মনে করেন তাপমাত্রা যত নিচে সেট করা হবে, খাবার তত বেশি ঠাণ্ডা থাকবে। কিন্তু এটা কম্প্রেসারের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করে। গরম মৌসুমে ফ্রিজকে খুব কম তাপমাত্রা বজায় রাখতে হলে কম্প্রেসার অতিরিক্ত কাজ করতে হয়, যা ওভারহিট বা সম্পূর্ণ ক্ষয় হতে পারে। এমন পরিস্থিতি আগুন বা বিস্ফোরণের ঝুঁকি বাড়ায়।

 ২. নিম্নমানের প্লাগ বা এক্সটেনশন কর্ড ব্যবহার

অনেক ব্যবহারকারী ফ্রিজকে সাধারণ বা নিম্নমানের সকেটে প্লাগ করেন। ভারী বৈদ্যুতিক যন্ত্রের জন্য এটি নিরাপদ নয়। এর ফলে শর্ট সার্কিট, স্পার্ক বা বৈদ্যুতিক লোড বাড়তে পারে। তাই অবশ্যই ভোল্টেজ অনুযায়ী মানসম্মত সকেট এবং বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার করতে হবে।

৩. ফ্রিজ ভর্তি করা এবং গরম খাবার রাখা

ফ্রিজে বেশি জিনিস রাখা বা গরম খাবার সরাসরি রাখার ফলে এয়ার সঠিকভাবে চলাচল করতে পারে না। এর ফলে ফ্রিজের কুলিং দক্ষতা কমে যায় এবং কম্প্রেসারকে অতিরিক্ত চাপের মুখোমুখি হতে হয়। ফ্রিজের আয়ু কমে যাওয়ার পাশাপাশি ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়ে।

 ৪. অপ্রতুল বাতাস চলাচলের জায়গায় ফ্রিজ রাখা

ফ্রিজের স্থান নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ। বদ্ধ জায়গা, যেমন রান্নাঘরের কোণ, যেখানে বাতাস ঠিকমতো চলাচল করে না, কম্প্রেসারের তাপ মুক্তি বন্ধ করে দেয়। তাই ফ্রিজকে সবসময় পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল সহ, সরাসরি সূর্যালোক ও তাপ উৎস থেকে দূরে রাখতে হবে।

 ৫. নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাব

ফ্রিজে ধুলো, নোংরা সীল বা বাতাসের চলাচল বন্ধ হওয়া কার্যক্ষমতা হ্রাস করে। বারবার দরজা খোলা এবং ঠান্ডা বাতাস বের হওয়া ও তাপ প্রবেশ করানোও কম্প্রেসারের ওপর চাপ বাড়ায়। নিয়মিত পরিষ্কার এবং সচেতন ব্যবহারে ফ্রিজ দীর্ঘমেয়াদে নিরাপদ ও কার্যকর থাকে।

 নিরাপদ ফ্রিজ ব্যবহারের পরামর্শ

  • সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখুন: ফ্রিজ ৩–৪ সেলসিয়াস এবং ফ্রিজার  মাইনাস ১৮ সেলসিয়াস তাপমাত্রা রাখার চেষ্টা করুন।
  • নিরাপদ প্লাগ ও তার ব্যবহার করুন।
  • ফ্রিজ অতিরিক্ত ভর্তি করবেন না এবং গরম খাবার আগে ঠান্ডা হতে দিন।
  • পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল নিশ্চিত করুন।
  • নিয়মিত পরিষ্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ করুন।

গরমের সময় ফ্রিজ ব্যবহারে সচেতনতা অপরিহার্য। ছোটখাটো ভুলও বড় বিপদের কারণ হতে পারে। সঠিক তাপমাত্রা, নিরাপদ বৈদ্যুতিক সংযোগ, পর্যাপ্ত বায়ু, ফ্রিজ ভর্তি না করা এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ এই কিছু সহজ নিয়ম মানলেই ফ্রিজ নিরাপদে চলবে এবং আপনিও নিরাপদ থাকবেন। ফ্রিজ শুধুমাত্র খাবার ঠান্ডা রাখে না, পরিবারের নিরাপত্তারও অংশ। তাই সতর্কতা অবলম্বন করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও পুনে পার্লস 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *