নিষিদ্ধ হওয়ার পর বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেছে, সরকার নিজেদের অপকর্ম ঢাকার জন্য সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে চলমান আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চাচ্ছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকারের এই হাস্যকর সিদ্ধান্ত ছাত্রশিবিরসহ দেশের ছাত্রসমাজ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।
বৃহস্পতিবার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকারের প্রজ্ঞাপন জারির পর বিবৃতি দেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম।
বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, ১৯৭৭ সাল থেকে আজ অবধি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দেশের প্রতিটি সেক্টরে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক উপহার দিয়ে আসছে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং সুন্দর একটি সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিটি জনশক্তি জালেমের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে দেশ ও জাতির কল্যাণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। গঠনমূলক কাজ, উন্নত নৈতিক চরিত্র ও ইসলামের সুমহান আদর্শের অনুসরণের মাধ্যমে এ কাফেলা আপামর ছাত্রজনতার আশা-ভরসার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দেশের কৃষক, শ্রমিক, মজুর থেকে শুরু করে সকল শ্রেণি-পেশা ও ধর্ম-বর্ণের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত কাফেলা ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ বললেই এ কাফেলা নিষিদ্ধ হয়ে যায় না। নিষিদ্ধ করে কোনো আদর্শকে দাবিয়ে রাখা যায় না। সুতরাং, অবৈধ সরকার যত চেষ্টাই করুক, ছাত্রশিবিরকে দেশের মাটি ও মানুষ থেকে আলাদা করতে পারবে না। বরং রাতের আঁধারে শত শত নিরীহ আলেম হত্যা, অসংখ্য-অগণিত ইসলামপ্রিয় মানুষ হত্যা, ছোট ছোট ফুলের মতো নিষ্পাপ শিশু ও অসংখ্য ছাত্রের ওপর গণহত্যার দায়ে এই সরকারকেই জনতার আদালতে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হবে।
ছাত্রশিবিরের নেতারা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ইতোপূর্বে কোনো স্বৈরাচারকে মেনে নেয়নি। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিকিয়ে দিয়ে প্রতিবেশী প্রভুর অনুকম্পায় অবৈধভাবে দীর্ঘ ১৫ বছরের অধিক সময় ধরে ক্ষমতা দখল করে থাকা এই সরকারকেও মেনে নিচ্ছে না। সাধারণ ছাত্রজনতার ওপর গণহত্যা চালানো গণবিরোধী আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে দেশের মানুষ লালকার্ড দেখিয়েছে।
নেতারা আরও বলেন, ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণাকারী গণহত্যা সংঘটনকারী সংগঠন আওয়ামী লীগকেই বিগত দুই মাসে জনগণ লালকার্ড দেখিয়ে দিয়েছে। ছাত্রলীগকে সাধারণ ছাত্ররা বিভিন্ন ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনগুলোও এখন দেউলিয়া হয়ে গেছে। দেশের সর্বস্তরের বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক ও সচেতন মহল আজ একনায়কনান্ত্রিক ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তাদের এই প্রজ্ঞাপন দেশের জনগণ ও ছাত্রসমাজও ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। ফলে সাধারণ ছাত্রজনতার ম্যান্ডেট হারিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। তাদের পতন ঘণ্টা ইতোমধ্যে বেজে গেছে।
Leave a Reply