১৩ দিন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে হার মানলেন কিশোর ওমর ফারুক। গত ১৯ জুলাই কোটাবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন থাকা লালমোহনের ১৭ বছরের ওমর ফারুক বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টায় মারা গেছেন। মহাখালীর বক্ষ্যব্যাধি হাসপাতালে তিনি মারা যান।
ওমর ফারুক লালমোহনের চরভূতা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাহাদুর চৌমুহনী এলাকার ক্বারী বাড়িসংলগ্ন মুন্সি বাড়ির ফয়েজুল্লাহ মুন্সির ছেলে। বাবা ও বড় ভাই এমরানসহ ৩ জন রায়েরবাগ এলাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। বাবা রায়েরবাগ একটি মসজিদের খাদেম। ওমর ফারুক সেখানে কেমিক্যাল কোম্পানিতে ১০ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করতেন।
গত ১৯ জুলাই শুক্রবার বিকালে রায়েরবাগে কোটাবিরোধেী আন্দোলনকারী ও পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন ওমর ফারুক। ১টি গুলি তার ফুসফুসে লাগে, আরেকটি গুলি বগলের নিচে লাগে। তাকে মহাখালী বক্ষব্যাধি হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
ওমর ফারুকের বড় ভাই এমরান ও মামা আনোয়ার হোসেন জানান, ওমর ফারুক বেশি লেখাপাড়া করতে পারেনি। স্থানীয় মাদ্রাসায় পড়ে ৩ বছর আগে ঢাকায় চলে আসে। ঢাকার কদমতলী এলাকার জয় কেমিক্যাল কোম্পানিতে চাকরি করত সে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে কাটাতে হয়েছে সবাইকে। মৃত্যুর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ছাড়া লাশ হস্তান্তর করেনি।
শুক্রবার বিকাল ৪টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ হস্তান্তর করেনি বলে তারা জানান। পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য থানায় ঘুরছেন তারা।
ওমর ফারুকের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ভোলার লালমোহন উপজেলার ৮ জন নিহত হওয়ার তালিকা পাওয়া গেছে।
নিহতরা হলেন- লালমোহন লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের ইউসুফের ছেলে আরিফ (হোটেল কর্মচারী), পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের পাঙ্গাসিয়া গ্রামের মো. হানিফ মিয়ার ছেলে মো. মোসলেহ উদ্দিন (লন্ড্রি দোকানি), বদরপুর ইউনিয়নের কাজিরাবাদ গ্রামের মৃত দলিল উদ্দিনের ছেলে শাকিল (হোটেল কর্মচারী), কালমা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের হমুজউদ্দিন বাড়ির বজলুর রহমান বেপারীর ছেলে আকতার হোসেন (অটোচালক), একই ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের লেছ ছকিনা গ্রামের খলিল রদ্দির ছেলে মুফতি মো. শিহাবুদ্দিন (বেফাক কর্মকর্তা) ও মো. আকবর হোসেনের ছেলে সাইদুল (হোটেল কর্মচারী) এবং ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের চরমোল্লাজী গ্রামের শফিউল্যাহর ছেলে হাবিবুল্লাহ (গাড়িচালক)।
Leave a Reply