দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও আর্থিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণায় সময় নিতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে একটি পে-কমিশন গঠন করা হয়েছে, যা গত ১৪ আগস্ট প্রথম সভা করেছে। কমিশনকে আগামী ছয় মাসের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ সুপারিশমালা জমা দিতে বলা হয়েছে। ফলে চলতি অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের আগে নতুন পে-স্কেল ঘোষণা করছে না। নতুন সরকার গঠনের পরই এই কাঠামো বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, দেশের মূল্যস্ফীতি ও আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে সময়োপযোগী একটি বেতন কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। তবে নির্বাচনী প্রস্তুতির কারণে সময় সংকট থাকায়, ঘোষণাটি ভোটের আগেই দেওয়া সম্ভব নয়। সে কারণে নির্বাচনের পরে কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
বর্তমানে চালু থাকা ২০১৫ সালের পে-স্কেলে ২০টি গ্রেড রয়েছে। নতুন কাঠামোয় এই সংখ্যা কমানো বা বাড়ানো হতে পারে। পাশাপাশি বেতন বৈষম্য দূর করতে বিশেষভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে। জানা গেছে, এই কমিশনের আওতায় সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি মঞ্জুরিপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
বেতন কাঠামো ঘোষণায় বিলম্ব হলেও সরকার জানিয়েছে, কর্মচারীরা নিয়ম অনুযায়ী মহার্ঘভাতা পেয়ে যাবেন। এটি চলমান থাকবে যতদিন না পর্যন্ত নতুন কাঠামো কার্যকর হয়। সাধারণত প্রতি পাঁচ বছর পরপর নতুন পে-স্কেল ঘোষণার নিয়ম থাকলেও, গতবার সেটি মানা হয়নি। ফলে অনেক কর্মচারী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সব মিলিয়ে, পে-স্কেল ঘোষণা এখন নির্বাচনের পরের বিষয় হলেও, প্রক্রিয়া এগোচ্ছে নিয়মমাফিক। কমিশনের রিপোর্ট হাতে পেলে নতুন সরকার তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে—এমনটাই প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
Leave a Reply