বাংলাদেশে তরুণদের মধ্যে দিন দিন বাড়ছে ব্লাড ক্যান্সার বা লিউকেমিয়ার প্রাদুর্ভাব। আগে মূলত বয়স্কদের মধ্যে এ রোগ দেখা যেত, কিন্তু এখন ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের মধ্যেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দূষণ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ ও জিনগত কারণ এর পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে।
ব্লাড ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ
ব্লাড ক্যান্সারের শুরুতে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয়, যা অনেকেই সাধারণ অসুস্থতা ভেবে অবহেলা করেন। কিন্তু এগুলো হতে পারে বড় বিপদের ইঙ্গিত—
🔹 দীর্ঘদিন জ্বর থাকা বা বারবার জ্বর আসা
🔹 অল্পতেই ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব
🔹 অকারণে ওজন কমে যাওয়া
🔹 হাড় ও জয়েন্টে স্থায়ী ব্যথা
🔹 শরীরে সহজে রক্তক্ষরণ বা কালশিটে দাগ
🔹 ঘন ঘন ইনফেকশন হওয়া
🔹 গলা বা বগলে গাঁট ফোলা
🔹 ক্ষুধা হ্রাস ও রাতে অতিরিক্ত ঘাম হওয়া
কেন তরুণরা ঝুঁকিতে?
চিকিৎসকদের মতে, আধুনিক জীবনযাত্রায় তরুণরা অনেক সময় রাত জাগা, ফাস্টফুড খাওয়া, ধূমপান ও মাদকাসক্তির মতো ক্ষতিকর অভ্যাসে জড়িয়ে পড়ছে। এর ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যাচ্ছে এবং শরীরে ক্যান্সারের কোষ তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।
দেরিতে শনাক্ত হলে ভয়াবহ পরিণতি
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, ব্লাড ক্যান্সার দ্রুত শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে দেরিতে শনাক্ত হলে চিকিৎসা কঠিন হয়ে যায় এবং মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায়। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে কেমোথেরাপি, টার্গেটেড থেরাপি ও বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্টের মাধ্যমে অনেক রোগী সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।
বিশেষজ্ঞদের করণীয় পরামর্শ
🔹 কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যান।
🔹 নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করান, বিশেষ করে পরিবারে যদি ক্যান্সারের ইতিহাস থাকে।
🔹 ধূমপান ও মাদক থেকে দূরে থাকুন।
🔹 সুষম খাবার, পর্যাপ্ত ঘুম ও নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
👉 মনে রাখবেন—প্রাথমিক পর্যায়ে সতর্কতা ও সচেতনতা জীবন বাঁচাতে পারে। তাই লক্ষণ অবহেলা নয়, চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি।
Leave a Reply