মেট্রোরেল পরিচালনায় আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষায় নতুন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার। মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সরকারি মালিকানাধীন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানিয়েছে, মেট্রোরেলের অনেক রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা ব্যয় প্রকল্প থেকে নির্বাহ করা হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির শর্তেই এ ব্যয়ের বিষয় রয়েছে; কিন্তু আগামী বছর থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আর রক্ষণাবেক্ষণ করবে না। ফলে মেট্রোরেল পরিচালনায় ব্যয় বাড়বে।
ফলে কর্তৃপক্ষ বিকল্প আয়ের পথ খুঁজছে। উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে স্টেশনভিত্তিক দোকান, ব্যাংকের বুথ ও বিজ্ঞাপন ভাড়া দেওয়ার। ইতিমধ্যে ৩১টি দোকান ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ভাড়া নিতে যেভাবে আবেদন করবেন-
ডিএমটিসিএল এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ভাড়া নিতে আগ্রহীরা ১৭ আগস্ট থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অফিস চলাকালীন মেট্রোরেল ভবনের (৩১৯ নম্বর রুম, লেভেল-৩, দিয়াবাড়ি, উত্তরা) অফিস থেকে আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রতিটি ফরমের মূল্য ৫ হাজার টাকা, যা পে-অর্ডার বা ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে জমা দিতে হবে (অফেরতযোগ্য)। ইতিমধ্যে ৩০টির মতো আবেদন জমা পড়েছে।
আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া নেওয়ার জন্য কিছু মৌলিক যোগ্যতা থাকতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, আয়কর সনদ, আয়কর প্রদানের প্রমাণপত্র, ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ব্যাংকের ইস্যুকৃত গত এক বছরের লেনদেন বিবরণী ও আর্থিক সচ্ছলতার সনদপত্র।
এ ছাড়া আবেদনকারীকে তাঁর ব্যবসার পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা জমা দিতে হবে। কোন পণ্য বা সেবা বিক্রি করা হবে, কীভাবে পরিচালনা করা হবে ও জনবল কাঠামো কেমন হবে—এমন বিস্তারিত তথ্য আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। পরিকল্পনায় মেট্রোস্টেশনের নিরাপত্তা ও নান্দনিকতা অগ্রাধিকার পাবে।
চুক্তির প্রাথমিক মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। আবেদন জমার সময় বার্ষিক ভাড়ার ১৫ শতাংশ জামানত হিসেবে জমা দিতে হবে। চুক্তি সইয়ের আগে বার্ষিক ভাড়ার ২০ শতাংশ নিরাপত্তা জামানত ও এক বছরের ভাড়া অগ্রিম পরিশোধ করতে হবে। প্রতিবছর ভাড়া ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, এ পর্যন্ত যেসব আবেদন জমা পড়েছে, এর বেশির ভাগই ফাস্টফুড ও কফি শপের জন্য। তবে নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে মেট্রোস্টেশনের দোকানে গ্যাসের চুলার অনুমোদন দেওয়া হবে না।
দোকান বরাদ্দের ক্ষেত্রে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র–পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ দরদাতাকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হবে। প্রয়োজনে দরদাতাদের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেবে ডিএমটিসিএল।
স্টেশনে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য যেসব দোকান রয়েছে, এগুলোর আয়তন ২০০ থেকে ২০০০ বর্গফুট। সর্বোচ্চ চারটি দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে উত্তরা উত্তর স্টেশনে। পল্লবী, কাজীপাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সচিবালয় স্টেশনে ইজারা দেওয়া হবে তিনটি করে দোকান। দুটি করে দোকান রয়েছে উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, মিরপুর-১১, শেওড়াপাড়া, বিজয় সরণি ও মতিঝিল স্টেশনে। ফার্মগেট, শাহবাগ ও মিরপুর-১০ স্টেশনে বরাদ্দ দেওয়া হবে একটি করে দোকান।
Leave a Reply