দেশের কয়েকটি দুর্বল ব্যাংকে জমানো গ্রাহক আমানতের পাশাপাশি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সও আটকে গেছে। তারল্য সংকটের অজুহাতে এসব ব্যাংক গ্রাহকের চাহিদা মতো টাকা দিচ্ছে না। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ গ্রাহক থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী ও প্রবাসী পরিবারের সদস্যরা।
গ্রাহকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা নিজ শাখা থেকে টাকা তুলতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে অন্য শাখায় গেলেও মেলে না কাঙ্ক্ষিত অর্থ। অনেকে প্রয়োজনের তুলনায় মাত্র আংশিক টাকা পাচ্ছেন।
এক শিক্ষার্থী জানান, “আমি ইউটি ইউনিভার্সিটিতে পড়ি। সেমিস্টার ফি দেওয়ার জন্য টাকা প্রয়োজন। অথচ ব্যাংক থেকে ২০–২৫ হাজার টাকা তুলতে চাইলে মাত্র ৩–৫ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে।”
এমন পরিস্থিতিতে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সও আটকে যাচ্ছে। জানা গেছে, চারটি দুর্বল ব্যাংকে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকার বেশি রেমিটেন্স আটকে আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ উঠেছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের বিরুদ্ধে।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্বীকার করে বলেন, “গ্রাহকরা একসঙ্গে টাকা তুলতে চাইছেন। তারল্য সংকটের কারণে তাৎক্ষণিকভাবে পূরণ করা যাচ্ছে না।”
বিশ্লেষকরা মনে করেন, রেমিটেন্সের টাকা আটকে রাখা অনৈতিক। কারণ এই অর্থ সরাসরি পরিবার বা প্রাপকের জন্য পাঠানো হয়। তারা অভিযোগ করেন, ব্যাংকগুলো প্রবাসীদের কষ্টার্জিত টাকা অন্য খাতে ব্যবহার করছে।
একজন ক্ষুব্ধ গ্রাহক বলেন, “আমার আত্মীয় টাকা পাঠাচ্ছে আমাকে দেওয়ার জন্য। কিন্তু ব্যাংক সেটি অন্য কাউকে দিচ্ছে। এটা কেমন কথা?”
কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, রেমিটেন্স আটকে রাখার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “তারল্য সংকট থাকতেই পারে, তবে বৈদেশিক মুদ্রা এলে তা গ্রাহককে পরিশোধ করতেই হবে। অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দুর্বল ব্যাংকগুলোর আর্থিক সংকট নিরসনে একীভূতকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, এই প্রক্রিয়া কার্যকর হলে গ্রাহকের পাওনা ফেরত দেওয়া সহজ হবে।
Leave a Reply