free tracking

সরকারি চাকরিজীবীদের বড় সুখবর দিলেন প্রধান উপদেষ্টা !

সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একটি যৌক্তিক, সময়োপযোগী ও বাস্তবমুখী বেতন কাঠামো নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। এ লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় বেতন কমিশনের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই নির্দেশনা দেন।

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) বিকেলে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় বেতন কমিশনের প্রতিনিধিদের মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন কমিশনের চেয়ারম্যান, সদস্য এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

বৈঠকে ড. ইউনূস বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শুধু বেতন বাড়ালেই চলবে না, স্বাস্থ্যবীমার মতো নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জরুরি। তিনি বলেন, “একটা অসুখে অনেক সময় মানুষ তার সব সঞ্চয় হারিয়ে ফেলে। অথচ যদি ইনসুরেন্স থাকে, পরিবার অনেকটা নিশ্চিন্তে থাকে। আমাদের আশপাশের দেশগুলোতে এ ধরনের বীমা চালু আছে। আমাদেরও এমন কিছু ভাবা উচিত।”

বৈঠকে জাতীয় বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান, সাবেক অর্থসচিব ও পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান জানান, কমিশন পুরোদমে কাজ শুরু করেছে। কমিশনকে ছয় মাস সময় দেওয়া হলেও তার আগেই তারা চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি বলেন, “গত এক দশকে দেশে মূল্যস্ফীতি ও জিডিপি বাড়লেও সরকারি কর্মীদের বেতন বাড়েনি সে হারে। ফলে অনেকেই বাস্তব আয় কমে যাওয়ায় দুরবস্থায় পড়েছেন। তাই একটি আধুনিক, কার্যকর ও সবার জন্য গ্রহণযোগ্য বেতন কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে।”

জাকির আহমেদ আরও বলেন, “নতুন কাঠামোতে শুধু বেতন নয়, আয়কর বিবেচনায় বেতন নির্ধারণ, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা, যাতায়াত ভাতা, রেশন সুবিধা, পেনশন ও অবসর সুবিধা, ইনক্রিমেন্টের অসঙ্গতি দূর করার পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এতে সরকারি চাকরি আরও স্বচ্ছ ও আকর্ষণীয় হবে বলে আশা করছি।”

তিনি আরও জানান, কমিশন ইতোমধ্যেই বিভিন্ন খাত থেকে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে। বিশেষায়িত চাকরির জন্য আলাদা বেতন কাঠামো, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে বেতনের স্বয়ংক্রিয় সমন্বয়, কর্মীদের কাজের মান অনুযায়ী মূল্যায়ন এবং টেলিফোন, গাড়ি ও মোবাইল সংক্রান্ত আর্থিক সুবিধার যৌক্তিকীকরণ নিয়েও কমিশন কাজ করছে।

বেতন কাঠামো নির্ধারণে জাতীয় বেতন কমিশন কাজ করছে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মঞ্জুরিপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য। এ সব প্রতিষ্ঠানের বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পর্যালোচনা করে কমিশন একটি সময়োপযোগী প্রস্তাব দেবে।

এক দশক পর গঠিত এই নতুন বেতন কমিশন দেশের সরকারি খাতের জন্য একটি অর্থনৈতিক ভারসাম্যপূর্ণ, সামাজিকভাবে ন্যায্য ও টেকসই বেতন কাঠামো গঠনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী, কমিশন যথাসময়ে বা তার আগেই চূড়ান্ত সুপারিশ প্রদান করবে বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *