আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যাংক ও আর্থিক খাতে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে, যার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ গ্রাহকদের এমন অভিযোগ উঠেছে। বহু ব্যাংকে জমা রাখা গচ্ছিত অর্থ তুলতে পারছেন না সাধারণ আমানতকারীরা। বর্তমানে পাঁচটি বেসরকারি ব্যাংক কার্যত নামেমাত্র টিকে আছে, ১২টি ব্যাংক দেউলিয়ার পর্যায়ে এবং আরও ১৫টি ব্যাংক অতিমাত্রায় দুর্বল হয়ে পড়েছে।
বক্তারা জানান, দখল ও লুটপাটের কারণে ব্যাংক খাতে খেলাপির মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। বর্তমানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। আগামীতে মোট ঋণের মধ্যে খেলাপির হার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়, যা তারল্য সংকট আরও বাড়াবে।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে ব্যাংক খাত নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে এসব তথ্য উঠে আসে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং জার্মানির ওটিএইচ এমবার্গ ওয়েডিন যৌথভাবে সেমিনারের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সেমিনারে বক্তারা জানান, বর্তমানে কার্যত ১২টি ব্যাংক দেউলিয়ার পর্যায়ে পৌঁছেছে, যারা আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। এছাড়া ১৫টি ব্যাংক অতিমাত্রায় দুর্বল, যার মধ্যে আটটিতে সরাসরি লুটপাট হয়েছে।
বক্তারা অভিযোগ করেন, এস আলম একাই পুরো ব্যাংক খাত ধ্বংস করে দিয়েছেন এবং তার সহযোগীরাও এই ধ্বংসযজ্ঞে ভূমিকা রেখেছেন। এ কারণে খাতটি ঘুরে দাঁড়াতে অনেক সময় লাগবে।
তারা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাত থেকে আওয়ামী লীগ সরকার একটি শক্তিশালী ব্যাংক খাত পেয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতায় এসে তারা সংস্কারগুলো আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এর ফলে ব্যাংক খাতে বড় ধরনের লুটপাট ঘটে এবং খাতটি কার্যত ধ্বংস হয়।
সেমিনারে আরও জানানো হয়, লুটপাটের অর্থের বেশিরভাগই ইতোমধ্যে পাচার হয়ে গেছে, যা ফেরত আনার সম্ভাবনা নেই। এ কারণেই ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট বেড়েছে এবং এই সংকট আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। তবে কোন কোন ব্যাংক দেউলিয়ার পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা প্রকাশ করা হয়নি।
Leave a Reply