শেখ হাসিনার ভারতে আশ্রয় নেয়ার ৩য় দিনে মুখ খুললেন সায়মা ওয়াজেদ!

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করে প্রতিবেশী দেশ ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ জাতিসংঘের একটি সংস্থায় কর্মরত রয়েছেন। শেখ হাসিনার টানা ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের করুণ সমাপ্তির পর উল্লসিত জনতা এবং বিরোধিরা তার সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়ে। বাদ যায়নি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং সংসদ ভবনও। এদিকে, বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুতির তৃতীয় দিনে মন্তব্য করেছেন শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ। তিনি সাম্প্রতিক সহিংসতায় বাংলাদেশি নাগরিকদের মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘এত মানুষের প্রাণহানিতে আমার হৃদয় ভেঙে গেছে। এই সংকটের সময়ে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে পারছি না, তাকে জড়িয়ে ধরতে পর্যন্ত পারছি না, এতেও আমার হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে।’ খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করে এ হতাশার কথা জানান। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নতুন বাংলাদেশ ইস্যুতে ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর সংবাদমাধ্যমে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান সজীব ওয়াজেদ জয়। তবে সেই সময় সম্পূর্ণ নীরব ছিলেন সায়মা ওয়াজেদ।

এর আগে বুধবার প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম বিবিসির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সম্পাদক ইথিরাজন আনবারাসনকে দেয়া একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও সাবেক তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ছাত্র-জনতার উত্তাল আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (৫ আগস্ট) পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেও এ বিষয়ে দু’দিন আগে অর্থাৎ শনিবার তিনি প্রথমবারের মতো চিন্তাভাবনা করেছিলেন। তবে দেশ ছাড়ার ব্যাপারে কোন প্রস্তুতিই ছিল না শেখ হাসিনার।

তিনি বিষ্ময় প্রকাশ করে বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যে সরকার উৎখাতে (ছাত্র-জনতার আন্দোলনে) রূপ নেবে হবে, তা তারা কেউ ধারণা পর্যন্ত করতে পারেননি।

বিক্ষুব্ধ এবং সহিংস জনতা প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনের দিকে মিছিল নিয়ে পৌঁছাতে যতটা সময় লাগবে, দেশত্যাগের জন্য শেখ হাসিনার হাতে সেটুকু সময় বেঁধে দিয়েছিল সেনাবাহিনী। এমন তথ্যের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, আমার মা এবং খালার দেশছাড়ার জন্য নির্দিষ্ট করে কোন সময় বেঁধে দেয়া হয়নি।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনে বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর চালানো সহিংসতার একপর্যায়ে আন্দোলনের দাবি ‘এক দফায়’ রূপান্তরিত হয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে সেনাপ্রধানের পরামর্শ বিবেচনায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যেতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। ভারতের উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের হিন্ডন বিমানঘাঁটিতে অবতরণের পর তাকে দিল্লির একটি অজ্ঞাত, সুরক্ষিত জায়গায় নিয়ে আসে ভারত সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *