গত ২০১৩ সাল থেকে নাজমুল হাসান পাপন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলনের জেরে গণবিক্ষোভের কারণে চলতি মাসের ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। আকস্মিক এ অবস্থা থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা পালিয়ে যান। বাদ যায়নি দেশটির ক্রীড়াবিদরাও। ৫ আগস্ট থেকে তারা পলাতক আছেন। বর্তমানে বিসিবির সব কার্যক্রম সভাপতির উপর ন্যস্ত। হঠাৎ নিখোঁজ হওয়ায় বিসিবির কার্যক্রম থমকে গেছে। এই সময়ে বাংলাদেশে ক্রিকেট কীভাবে চলবে তা ভাবছেন দেশের প্রতিটি ক্রিকেট ভক্ত।
এদিকে পলাতক সভাপতির অবস্থান এখনো পাওয়া না গেলেও সম্প্রতি জানা গেছে পাপনের স্ত্রী লন্ডনে থাকেন। কারণ এর মুল শিকড় লন্ডনে রয়েছে। এই জন্যিই তিনি লন্ডনে থাকেন। তার সঙ্গে ছিলেন বিসিবি পরিচালক ইনায়েত হোসেন সিরাজও। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নির্বাচক জানিয়েছেন, নাজমুল হাসান পাপন বিসিবি সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়াতে প্রস্তুত। বোর্ডের প্রভাবশালী পরিচালকদের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন।
গত (১৫ আগস্ট) বিসিবি পরিচালক জাতীয় গণমাধ্যমকে বলেন, পাপন ভাই সহযোগিতা করতে চান। তিনি সরে যেতে চান। এই বিষয়ে আমার সাথে সরাসরি কোন কথোপকথন ছিল না. কিন্তু তিনি চলে যেতে চান। বিসিবির সিনিয়র ম্যানেজারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বললেন।
এদিকে পাপনের বিদায়ে রাজি হওয়ায় স্বস্তি বোধ করছে দেশের ক্রীড়া বিশ্ব। কিন্তু এখন যদি পাপন আলোচনা থেকে সরে আসেন তাহলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের দায়িত্ব কে নেবেন? এ নিয়ে অনেকেই কথা বললেও যে নামটি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে তিনি হলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ।
তার খেলার ক্যারিয়ারের পর, ফারুক আহমেদ ২০০৩-২০০৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ে তিনি সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তামিম ইকবালের মতো কয়েকজন তরুণের মধ্যে প্রচুর সম্ভাবনা দেখেন এবং তাদের জাতীয় দলে জায়গা দেন। তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দিলে দলের ভরসা হয়ে ওঠেন তামিম-মুশফিক-মাহমুদুল্লাহ-সাকিবরা।
এরপর ২০১৩ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পান। কিন্তু বিসিবির দ্বি-স্তরীয় নির্বাচক কমিটি, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও সীমাহীন দুর্নীতির প্রতিবাদে ২০১৬ সালে পদত্যাগ করেন তিনি। যা বাংলাদেশের ক্রিকেট মাঠের ইতিহাসও বটে।
২০১৫ বিশ্বকাপে তার সাফল্যের পর, তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ঘরের মাটিতে পাকিস্তান, ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জিতেছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই এলোমেলো হয়ে পড়ে বোর্ড। কাজ ব্যাহত হতে থাকে। সিস্টেমে একটি গলদ দেখা দেয়। বোর্ড কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ শুরু হয়। ২০১৬ সালে পদ ছাড়ার পর একাধিকবার এসব অনিয়মের কথা জানিয়েছিলেন স্পষ্টভাষী ফারুক আহমেদ।
এদিকে পাপন বিসিবির দায়িত্ব নেওয়া প্রসঙ্গে বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমি বাংলাদেশ ক্রিকেটকে ৩০ বছর সময় দিয়েছি। আমি যদি সুযোগ পাই, তবেই আসব যদি মনে হয় সেখানে কাজের পরিবেশ আছে। তবে শুধু খেলোয়াড় নির্বাচনের জন্য আসার কোনো ইচ্ছা আমার নেই। আমি কাজ করলে বড় পরিসরে কাজ করতে পারব। তবেই আবার ক্রিকেটে যোগ দিতে পারব।
Leave a Reply