বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) বাংলা বিভাগের ভাষাবিজ্ঞান কোর্সের মিডটার্ম পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সরকারি চাকরি পাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিতর্কিত উক্তি প্রশ্ন হিসেবে ব্যবহার হয়েছে। ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত হওয়া পরীক্ষার এই প্রশ্নকর্তা হলেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার।
এমন প্রশ্নে পরীক্ষা গ্রহণের পরপরই তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র এমন সৃজনশীলই হওয়া উচিত জানিয়ে মন্তব্য করেন অধিকাংশ শিক্ষার্থী।
প্রশ্নপত্রে উল্লেখ করা হয়, স্বরতরঙ্গ (ইনটোনেশন) বলতে কী বুঝ? মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নাতি-পুতিরা কেউ মেধাবী না? যত রাজাকারের বাচ্চা, নাতি-পুতিরা মেধাবী?’ উক্ত বাক্যটির বাক্যিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বরতরঙ্গের সাধারণ, উঁচু ও নিচু তিন অবস্থান বর্ণনা করে বুঝিয়ে দাও।
ফেসবুকে প্রশ্নটি শেয়ার করে মোহাম্মদ ইমাম লিখেছেন, ‘এই প্রশ্নে মুক্তিযোদ্ধার নাতি-পুতি যারা এক্সাম দিয়েছে তাদের অবস্থাটা একবার চিন্তা করেন।’
রেশমা ইসলাম আরশি ফেসবুকে লিখেছেন- ‘ভালো প্রশ্ন ২০২৪ সালে এসে এমন বাস্তবধর্মী উদাহরণেই প্রশ্ন হওয়া উচিত।’
বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইউসুফ আলম বলেন, বাক্যটি স্বরতরঙ্গ বিষয়ের বাস্তবিক একটা উদাহরণ। এমন বাস্তব উদাহরণের সাহায্যে স্বরতরঙ্গের বিষয়টি নিয়ে আমরা শিক্ষার্থীরা নতুন করে ভাবতে পারছি। বিশ্ববিদ্যালয় তো নতুন নতুন জ্ঞান, আহরণ, সৃজন, বিতরণের স্থান। গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে এমনিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন নতুন বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে হবে। এসব প্রশ্নের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের চিন্তার জগত বৃদ্ধি পায়।
কোর্সটির শিক্ষক বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার বলেন, স্বরতরঙ্গে সাধারণত বাক্যে কোনো শব্দের ওপরে জোর প্রয়োগ করতে এমন শব্দের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন- এখানে রাজাকার শব্দটির ওপরে জোর প্রয়োগ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে বাস্তবিক উদাহরণে বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করবে, বাস্তব যে কোনো বিষয়কে স্বরতরঙ্গের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করতে পারবে, সেই জায়গা থেকেই প্রশ্নে উক্তিটির উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের গত ১৪ জুলাই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ উক্তিটি করেন। তখন এমন উক্তি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিতর্কের দেখা দেয়।
Leave a Reply