বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করে শাস্তি পেয়েছিলেন ৫৭ প্রবাসী বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে শনিবার রাতে একজন ঢাকায় ও ১২ জন চট্টগ্রাম পৌঁছেছেন।
দেশে ফেরা প্রবাসীদের মধ্যে ছিলেন- মোহাম্মদ কাউছার উদ্দিন, মেহেদী হাসান রিপন, জহিরুল ইসলাম নাহিদ, মেহেরাজ উদ্দিন রাসেল, মোহাম্মদ হারুন, শাহজাহান, মোহাম্মদ সবুজ ও সাইদুল হক। তাদের অধিকাংশের বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান ও হাটহাজারীতে।
চট্টগ্রামের রাউজানের মধ্যম কদলপুর এলাকার মোহাম্মদ কাউছার উদ্দিন বলেন, চোখের পলকে সব এলোমেলো হয়ে গেল। দেশে গণহত্যার প্রতিবাদ জানাতে দাঁড়ালাম ব্যানার নিয়ে। আবুধাবির পুলিশ ধরে নিয়ে কাউকে দিয়ে দিল যাবজ্জীবন, কাউকে জেল। কারাগারে শুধু কাঁদতাম, নামাজ পড়তাম আর রোজা রাখতাম। এক বেলা ভাত দিত। দুই বেলা রুটি। এক রুমে থাকতাম ৩০ জন। এভাবেই কাটে ৪৯ দিনের অনিশ্চিত জীবন।
তিনি বলেন, মুক্তির খবর যেদিন শুনলাম, মনে হলো নতুন জীবন পেয়েছি। তবে প্রাণ নিয়ে দেশে ফিরলেও সব তছনছ হয়ে গেছে। কিছুই আনতে পারিনি। কখনো আর যেতেও পারব না। বাকি জীবন কীভাবে কাটাবো? মাথায় ঋণের বোঝা।
দেশে ফেরা আরেকজন মেহেদী হাছান রিপন। তিনি বলেন, আমিরাতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে ২৫ বছরের জেল। দণ্ড মওকুফ না হলে বাকি জীবন হয়ত জেলেই কাটাতে হতো। কিছুই আনতে পারিনি। শুধু প্রাণটা নিয়ে এসেছি।
মোহাম্মদ হারুন নামে আরেকজন বলেন, আরব আমিরাতে পরিচিতজনদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। সেখানে কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করে প্রতিবাদ জানাতে একত্রিত হই সবাই। কিন্তু পুলিশ যে এত প্রতিক্রিয়া দেখাবে, জানা ছিল না।
অন্তর্বর্তী সরকার তাদের দণ্ড মওকুফের উদ্যোগ নেয়ায় কৃতজ্ঞতা জানান সাইদুল হক। তিনি বলেন, ভেবেছিলাম দণ্ড কার্যকর হওয়ার আগে আর মুক্তি মিলবে না। কিন্তু সরকার উদ্যোগ নেয়ায় মুক্ত হয়েছি। চাকরি গেলেও অন্তত পরিবারের সঙ্গে একত্রিত হতে পারছি। আমাদের সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া অনেকে এখনো বন্দি। সরকার যেন তাদেরও মুক্তির ব্যবস্থা নেয়।
Leave a Reply