দিনাজপুরে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩টি ইউনিটই উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কোন বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না। ফলে সারা দেশে ২৮০ থেকে ২৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দেবে। এই পরিমান বিদ্যুৎ দিয়ে প্রায় ৩টি জেলায় সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যেতো।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩নং ইউনিটের ওয়েলপাম্প নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে উৎপাদন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রের ১নং ইউনিট বন্ধ করা হয় আর ওভারহোলিং কার্যক্রমের জন্য ২০২০ সালের নভেম্বর থেকেই বন্ধ রয়েছে কেন্দ্রের ২নং ইউনটি।
বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১নং ইউনিটটি ১২৫ মেগাওয়াট, ২নং ইউনিটটি ১২৫ মেগাওয়াট ও ৩নং ইউনিটটি ২৭৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন। মাত্র ৩ দিনের ব্যবধানে এই কেন্দ্র থেকে ২৮০ থেকে ২৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হলো। এর মধ্যে ১নং ইউনিট থেকে ৬০ থেকে ৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ও ৩নং ইউনিট থেকে ২১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছিল।
বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।
তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, ইউনিটগুলো সচল রাখতে প্রতিটি ইউনিটে ২টি করে ইলেক্ট্র হাইড্রোলিক ওয়েলপাম্প জ্বালানি তেল সরবরাহ করে। তবে একটি ওয়েলপাম্প দিয়েও জ্বালানি তেল সরবরাহ করে ইউনিট চালু রাখা যায়। সবশেষ ৩নং ইউনিটটি একটিমাত্র ওয়েলপাম্পের মাধ্যমে চালু রাখা হয়েছিল। তবে সেই পাম্পেও ত্রুটি দেখা দেয়ায় উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া হয়।
তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যান্ত্রিক ত্রুটি মেরামত ও যন্ত্রাংশ সরবরাহের জন্য হারবিন ইন্টারন্যাশনাল ও সিএমসি-এক্সএমসি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি রয়েছে। চুক্তি মোতাবেক ঠিকাদারি এসব কোম্পানি ত্রুটি মেরামত করে কেন্দ্র সচল রাখার কথা থাকলেও করোনার পর থেকেই চুক্তির চেয়ে যন্ত্রাংশের দাম বেড়ে যাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে কোম্পানিগুলো সঠিকভাবে যান্ত্রিক ত্রুটি মেরামত করছে না। তবে ত্রুটি মেরামতের জন্য ইতিমধ্যেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করা হয়েছে।
বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক জানান, আমাদের ইক্যুইপমেন্ট ফেইল করার কারণে ৩০০ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন তিনি আরও জানান, ১নং ইউনিটটি অনেক পুরাতন ইউনিট, ভাইব্রেশনের কারণে আমরা গত ৭ সেপ্টেম্বর সেটি বন্ধ করেছি। আমরা চেষ্টা করছি এটি এক সপ্তাহের মধ্যে চালু করতে। তবে এক সপ্তাহ লাগবে না ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যেই চালু হবে। আমরা একটু বেশি করেই এক সপ্তাহ সময় নিয়েছি। আর ২নং ইউনিটটি ২০২০ সাল থেকেই ওভারহোলিং কার্যক্রমের জন্য বন্ধ রয়েছে। চায়নারা এখনও কাজ শুরু করেনি। এই ইফনিটটির ব্যাপারে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। সিএমসি-এক্সএমসি কোম্পানির সঙ্গে ওভারহোলিংয়ের কাজটির চুক্তি হয়েছে। কিন্তু তারা কাজটি করতে পারেনি। ২০২০ সালে করোনা হওয়ার পর জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে, এজন্য তারা দাম বাড়ানোর দাবি করেছে। কিন্তু আমরা বলেছি যে আগের চুক্তিতেই থাকতে হবে। এভাবেই কথাগুলো হচ্ছে। এখনও এ ব্যাপারে আলোচনা আগায়নি।
লোডশেডিংয়ের ব্যাপারে তিনি জানান, এখন আমাদের ২৮০ থেকে ২৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ শর্টেজ। দেশে ওইটুকু লোডশেডিং হবে।
Leave a Reply