সাভারের আশুলিয়ায় একটি ফ্ল্যাটে একই পরিবারের তিনজনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে আশুলিয়ার উত্তর ভাদাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, আশুলিয়ার ভাদাইল উত্তরপাড়া এলাকার এম এ হাসান বাচ্চু (৫৫), তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম (৩৫) ও তাদের শিশু মেয়ে মোছা. জান্নাতী (৪)।
প্রতিবেশীরা বলছেন, দাম্পত্য কলহের জেরেই এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
এলাকাবাসী জানায়, বাচ্চু তার স্ত্রী ও ছোট সন্তানকে নিয়ে তাদের চারতলা বাড়ির চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। আরেকটি কক্ষে ১৮ বছর বয়সী তার বড় ছেলে থাকেন। সকালে হঠাৎ চারতলা থেকে তার বড় ছেলে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার শুরু করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে এবং বাচ্চুর দরজা ভেতর থেকে বন্ধ অবস্থায় দেখতে পায়। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে তিনজনের নিথর দেহ দেখতে পায়। এ সময় তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতদের প্রতিবেশী ফরিদা বেগম বলেন, সকাল বেলা স্বপ্না আমার সঙ্গে কথা বলে তার মেয়েকে নিয়ে বাড়ির পাশে স্কুলে নিয়ে যায়। সকাল ১০টার দিকে মেয়েকে নিয়ে ফিরে আসে স্বপ্না। এ সময় বাচ্চু ও তার স্ত্রী স্বপ্নাসহ ছোট মেয়ে কক্ষের ভেতর দরজা আটকে দিয়েই ছিল। পাশের কক্ষে তাদের বড় ছেলে ঘুমাচ্ছিল। হঠাৎ তাদের বড় ছেলে কক্ষের দরজার নিচ দিয়ে ধোয়া বের হতে দেখে চিৎকার দিয়ে সবাইকে বাঁচানোর জন্য ডাকতে থাকে। পরে আমি গিয়ে আরো লোকজন ডেকে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করি এবং বাচ্চু ও তার স্ত্রীসহ ছোট সন্তানকে বিছানার ওপর পড়ে থাকতে দেখি। এ সময় বিছানার জাজিমে আগুন ও ধোয়ার কারণে কেউ সহজে ভেতরে ঢুকতে পারছিল না। পরে তাদের বাড়ির পাশে হাসপাতালে নেয়ার আগেই তিনজন মারা যায়।
তিনি আরো জানান, মনে হচ্ছে, বাচ্চু ও তার স্ত্রীর মধ্যে কোনো ঝামেলা হয়েছিল। যে কারণে কক্ষের ভেতরে তারা নিজেরাই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। বাচ্চুর গালে ধারালো অস্ত্রের জখমও দেখেছি। তাছাড়া তো আর কোনো কারণ দেখি না।
এদিকে, ঘটনার পর থেকে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে ঘটনাস্থলে র্যাব সদস্যরা উপস্থিত হন। তবে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পুলিশ কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদুর রহমান বলেন, ভাদাইলে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুর খবর জেনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত করে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply